কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানকে গ্রেফতারের জন্য খুঁজছে কলকাতা পুলিশের ৫ সদস্যের একটি দল। আর গ্রেফতার এড়াতে কারনান দেশ ছেড়ে লুকিয়ে আছেন বলে দাবি করেছেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আইন উপদেষ্টা ডব্লিউ পিটার রমেশ কুমার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে কারনান বৃহস্পতিবার ভোরেই সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশ নেপাল বা বাংলাদেশে চলে গেছেন বলে জানান এই সহযোগী। সড়কপথেই দেশ ছেড়েছেন তিনি। ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পেলেই কেবল তিনি দেশে ফিরবেন।
তবে কীভাবে কোন পথে কারনান দেশ ছেড়ে গেছেন সে সম্পর্কে আর কিছু জানাতে রাজি হননি রমেশ কুমার।
গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি কারনানকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে দ্রুত তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। নির্দেশমতো কারনানকে গ্রেফতার করতে পুলিশের একটি দল কলকাতায় তার নিউ টাউনের বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে তার খোঁজ মেলেনি। পুলিশের ধারণা, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের আগেই তিনি নিউ টাউন থেকে চেন্নাই চলে যান।
এরপরে রাজ্য পুলিশের ৫ সদস্যের দলটি বুধবার বিমানে চেন্নাই পৌঁছায় বলে জানায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ডিজি হোমগার্ড রাজ কানোজিয়া দলটির নেতৃত্বে ছিলেন। তামিলনাড়ু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করলেও সকালে চেন্নাই পৌঁছে বিচারপতি কারনানের নাগাল পাননি তারা।
গণমাধ্যম এবং পুলিশকে জানানো হয়েছিল, সিএস কারনান কলকাতা থেকে চেন্নাই পৌঁছে চিপক সরকারি গেস্ট হাইসে ওঠেন। এরপর আবার বুধবার সকালেই সেখান থেকে রওনা দেন চেন্নাই থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অন্ধপ্রদেশের মন্দির শহর কালাহস্তিতে। যদিও গেস্ট হাউসের ঘর তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে ছাড়েননি। তার টাকাপয়সাও মেটানো হয়নি।
তখনই কারনানের খোঁজে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে অন্ধ্রপ্রদেশের টাডা পর্যন্ত যায় পুলিশের ওই দলটি। কিন্তু সেখান থেকেও তাদের খালি হাতে ফিরতে হয় বলে জানায় হিন্দুস্থান টাইমস। কুমার জানান, কারনানের মোবাইল ফোনটাই শুধু চেন্নাই থেকে কালাহস্তি পর্যন্ত গেছে। ততক্ষণে বিচারপতি কারনান নিজে রওনা দেন উত্তরের দিকে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় মানহানির মামলায় ৭ বিচারপতির বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করেন কারনান। ওই রায়ের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা সিএস কারনানকে ৬ মাসের সাজা দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। রায়ে সিএস কারনানের দেয়া কোনো আদেশ মিডিয়ায় বড় করে প্রচার বা প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা চিঠিতে ভারতের ২০ জন বিচারক এবং ৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ উত্থাপন করে শাস্তি দাবি করেছিলেন সিএস কারনান। সেই থেকে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদ।