ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রথম জানাজা ও বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে দ্বিতীয় জানাজা শেষে নিজ বাড়ি নেত্রকোনায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ও বংশীবাদক বারী সিদ্দিকীর লাশ।
সকাল পৌনে দশটায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। সকাল সাড়ে দশটায় তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হয় রামপুরায় বিটিভি ভবনে। বারী সিদ্দিকী বিটিভির সংগীত পরিচালক ও মুখ্য বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর জানাজায় সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর, নকিব খান সহ দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য গায়ক এবং বাঁশিবাদকগণ উপস্থিত ছিলেন।
১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলায় এক সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে জন্মগ্রহণ করা বারী সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ১৯ নভেম্বর থেকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই শিল্পী।
গুণী এই সঙ্গীতজ্ঞের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছোটবেলা থেকেই। ধ্রুপদ সঙ্গীতে তালিম নেয়া শুরু মাত্র ১২ বছর বয়সে। তালিম নিয়েছেন ওস্তাদ গোপাল দত্ত, ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষসহ অনেক গুণীশিল্পীর সান্নিধ্যে থেকে। পরবর্তীকালে ভারতের পুনেতেও নব্বইয়ের দশকে পণ্ডিত ভিজি কার্নাডের কাছে তালিম নেন।
১৯৯৫ সালে হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনায় ইমপ্রেসের অনুষ্ঠান ‘রঙের বাড়ই’ এর মাধ্যমে তাঁকে প্রথম গণমাধ্যমে পায় শ্রোতারা। তাঁর আগে ১৯৯৩ সালে হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে তাঁর বাসায় বাঁশি শোনাতে গিয়ে প্রথম হুমায়ূনের নজরে আসেন বারী সিদ্দিকী। উকিল মুন্সীর গান ও মরমি গানে ছিল বারী সিদ্দিকীর অসাধারণ দখল।
১৯৯৯ সালে বছর হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে একাই সাতটি গান গেয়ে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন দীর্ঘদিন ধরে সঙ্গীত নিয়ে কাজ করা বারী সিদ্দিকী।
তার জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবিজান নাউ বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’।