ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে। সংক্ষেপে এফএফপি। সবশেষ নেইমার ও এমবাপের দলবদল নিয়ে প্রবল আলোচনায় এ বিষয়টি। ইউরোপের ফুটবল নিয়ামক সংস্থা উয়েফার এই এফএফপি জালে আটকে গেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন-পিএসজি। তাদের রাডার তাক করা রয়েছে ম্যানচেস্টার সিটির দিকেও।
উয়েফার দাবি, এবারের ফুটবল ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে নিয়ম লঙ্ঘন করেই ফুটবলার কেনাবেচা করেছে পিএসজি। আর সে পথে হাটছে সিটিও। ইংলিশ ক্লাবের দিকে নজরদারি থাকলেও প্যারিসের সাঁ সাঁর ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে উয়েফা। আর খেলোয়াড় কেনাবেচার এই অবস্থায় ফুটবলকে গুরুতর বিপদে দেখছেন শঙ্কিত ইউরোপিয়ান ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।
এবার দলবদলের সময় প্রায় সারা বিশ্বের সাংবাদিকেরা ফিনান্সিয়াল ফেয়ার প্লে জন্য এফএফপির হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। কিন্ত চুক্তিগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু করা সম্ভব হয়না বলেই জানানো হয়।
এফএফপি নিয়মানুযায়ী, এক মৌসুমে ক্ষতির পরিমাণ কোনওভাবেই ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি হবে না। তিন মৌসুমে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ কত, তা দেখা হয় এত। তারপর শেষ দুটি ও চলতি মৌসুমের আর্থিক বিশ্লেষণ করে লাভ বা ক্ষতির হিসাব করা হয়। প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমন হলে সেই ক্লাবকে ৩৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচে ছাড় দেয়া হয়।
ইউরোপের ফুটবল ক্লাবগুলোর আয়-ব্যয়ের সমতা রক্ষা করতে ২০১৩ সালে নতুন নিয়ম আনে উয়েফা। উদ্দেশ্য, ফুটবলার কিনতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ দেনার দায়ে ক্লাবগুলো যেন ডুবে না যায়।
কিন্তু এবার নেইমার ও এমবাপেকে নেয়ার পেছনে পিএসজি এরই মধ্যে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ করে ফেলেছে। যা এফএফপির নিয়ম লঙ্ঘন করেই করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উয়েফা। আর তার জেরেই উয়েফার তদন্ত কমিটির চোখ পড়েছে প্যারিসের ক্লাবটির উপর।
এফএফপির নিয়ম অনুযায়ী না লাভ, না ক্ষতিতে চলা ক্লাবগুলো এক্ষেত্রে ফুটবলার কেনাবেচায় তাদের গত তিন বছরের আয়ের চেয়ে তিন কোটি ইউরো বেশি খরচ করতে পারে।
গত পাঁচ বছর ধরেই পিএসজির মালিকানা রয়েছে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস ফান্ড নামক সংস্থার হাতে। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে পিএসজির আয় ছিল ৫২ দশকিক ০৯ কোটি ইউরো। লাভ হয় এক কোটি ইউরো।
পিএসজির উপর তদন্ত প্রসঙ্গে উয়েফা বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘না লাভ, না ক্ষতিতে চলা ক্লাবগুলোর ফুটবলার কেনাবেচার দিকে সতর্ক নজর রাখার জন্যই এই তদন্ত। আগামী মাসেই ক্লাবগুলোর এ সংক্রান্ত নথিপত্র চাওয়া হবে। কারণ ইউরোপের ফুটবলে আর্থিক ভারসাম্য রক্ষা করাটাই উয়েফার একমাত্র লক্ষ্য’।
যদিও উয়েফার বক্তব্যের পর পিএসজি পাল্টা বলেছে, ‘২০১৭-১৮ মৌসুমে ফুটবলার নেয়ার ক্ষেত্রে সব লেনদেনই হয়েছে উয়েফার এফএফপি মেনেই।’