ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এ দাবি জানায়।
প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে: ‘বাংলাদেশ সরকারের উচিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির বিস্তারিত তদন্ত চালানো, যে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ দায়েরের কারণে হত্যা করা হয়েছে এবং এর মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতে দেশজুড়ে যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়তে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে কর্তৃপক্ষের মাঝে একটি অনুরণন সৃষ্টি হওয়া উচিত।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মীনাক্ষি গাঙ্গুলি বলেছেন, ‘অন্যায়ের বিচার চাওয়া একজন সাহসী নারীর এমন ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে বাংলাদেশ সরকার যৌন নিপীড়নের শিকারদের ন্যায় দিতে কতটা ব্যর্থ।’
‘নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যু এটাই ফুটিয়ে তুলেছে যে, বাংলাদেশ সরকারের যৌন নির্যাতনের শিকারদেরকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া দরকার এবং নিশ্চিত করা দরকার যেন তারা নিরাপদে আইনি সহায়তা নিতে পারে ও প্রতিশোধমূলক আচরণ থেকে সুরক্ষিত থাকে,’ বলেন তিনি।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।
সেই মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা।
আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যান।