রাজধানীর কলাবাগানে ইংরেজি মাধ্যম পড়ুয়া স্কুলছাত্রীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। দাফন শেষে স্থানীয়রা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।
আজ শনিবার সকাল ৭টায় তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়া সদরের গোপালপুর গ্রামে জানাজা শেষে গোপালপুর গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
জানাজায় আনুশকার পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী অংশ নেয়। তার দাফন শেষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।
মেধাবী এই শিক্ষার্থীকে হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত ফারদিন ইফতেখার দিহানের কঠোর শাস্তিসহ এই ঘটনার সঙ্গে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকলে তদন্তপূর্বক তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে কঠোর শাস্তির দাবি জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে এবং কেউ যাতে এমন অপরাধ করার সাহস না দেখায়, সে জন্য সব অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মামলার এজাহার গ্রহণ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আসামি ইফতেখার ফারদিন দিহানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এছাড়া আগামী ২৬ জানুয়ারি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে ফরেসনিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ জানান, স্কুলছাত্রীটি বিকৃত যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে কলাবাগান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিহতের বাবা মো. আল আমিন বাদী হয়ে মামলাটি (নং-৬) দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে মো. আল আমিন অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে তিনি ও তার স্ত্রী কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। বেলা সাড়ে ১১টায় তাদের মেয়ে কোচিংয়ের পেপার আনতে বাইরে যাচ্ছে বলে ফোনে তার মাকে জানায়। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে সে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়, দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে আসামি দিহান ওই স্কুলছাত্রীটির মাকে ফোন দেয়। সে জানায়, আপনার মেয়ে আমার বাসায় গিয়েছিল। সেখানে হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করায়। এ কথা শুনে স্কুলছাত্রীর মা ১টা ৫২ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছায়। সেখানে গিয়ে তিনি কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে পারেন তাদের মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
নিহতের বাবা এজাহারে আরও বলেন, তারা বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছেন, দিহান তার মেয়েকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশে বেলা ১২টার দিকে বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে দিহান ফাঁকা বাসায় তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে তার মেয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে ধর্ষণের ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে দিহান তার মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আটক বাকি তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পেলে পুলিশ বাকি তিনজনকেও গ্রেপ্তার দেখানো হবে।