পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বর্জনের নাটক শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।
রোববার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে তিনি এ কথা বলেন৷
তিনি বলেছেন: পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্ট এখন নির্বাচন বর্জনের নাটক শুরু করেছে। আসলে তাদের অনেকের এই জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ভয় থেকেই তারা ভোট বর্জনের খেলায় মেতে উঠেছে। বিএনপি জামায়াতের নীতি হলো নির্বাচনে জিতলে আছি হারলে নাই।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন: সারা দেশে অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। ইতোমধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে প্রায় ৬ ঘণ্টা ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আমরা সর্বত্রই ভোটারদের সরব উপস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। আমরা আশা করছি ভোটগ্রহণের শেষ সময় পর্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে মানুষ ভোটাধিকার প্রদান করবে।
তিনি যোগ করেন: অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অতীতের যে কোনো নির্বাচন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতা কম হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ভোটের উৎসব ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
অপরদিকে বিএনপি জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্ট তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে ভোটের আগের রাত থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে সন্ত্রাস ও সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে এবং প্রতি মুহূর্তেই সারাদেশে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও আক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সহিংসতা যা ঘটছে তার শিকার শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই।
নানক অভিযোগ করেন: গত রাত থেকে বিএনপি জামাত সন্ত্রাসীদের হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। ৫৫ জন আহত হয়েছে, ছয়টি জায়গায় বোমা হামলা চালিয়ে ১০টি যানবাহন অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে; সাতজন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আহত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে। নোয়াখালী ২ আসন এর দায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের গাড়ি বহরে হামলা করা হয়েছে। চাঁদপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাসান জামান এর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
তিনি দাবি করেন: এখন পর্যন্ত বিদেশী পর্যবেক্ষকরাও নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। পর্যবেক্ষক ও নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপি জামায়াত শুধু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পুরনো কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। বাংলাদেশ ভোট ডাকাতির ইতিহাস সৃষ্টিকারী বিএনপি নির্বাচনে পরাজয়ের সম্ভাবনা দেখলে ভোট কারচুপির অভিযোগ করে।
ড. কামাল হোসেন নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের নামে জনগণের রায় ডাকাতি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। আমরা হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই জনগণের ভোট ডাকাতির অধিকার কারও নেই জনগণের রায় নিয়ে কাউকে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।
আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন: বিএনপি-জামায়াত ঐক্যফ্রন্ট ভোট বর্জনের ঘোষণা করলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের সমর্থকদের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত করা ও ভোট গ্রহণ এবং গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হচ্ছে। চূড়ান্ত ফলাফল না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম রব্বানী চিনু এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা।