ভারতের নির্ভয়া কাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার অপরাধী যে কোনও সময় আত্মহত্যা করতে পারে বা আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এমনই আশঙ্কা করছে ভারতের তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। এ কারণে তিহারে এখন সবচেয়ে কড়া পাহারায় রয়েছে মুকেশ, পবন, অক্ষয় ও বিনয়।
অন্যদিকে শনিবার দিল্লির আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, এই ধর্ষণ মামলায় মৃত্যু পরোয়ানার বিরুদ্ধে আসামীর প্রাণভিক্ষা, আইনজীবীর কোন যুক্তি এবং সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) আবেদন নিষ্পত্তি ঘোষণা করা হয়েছে।
অতিরিক্ত দায়রা জজ অজয় কুমার জৈন জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ধর্ষণ মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে আইনজীবী সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, ছবি, ডায়েরি এবং পেইন্টিং জমা দিয়েছে তিহার জেলে।
দিল্লি পুলিশের পক্ষে হাজির হয়ে সরকারি আইনজীবী আদালতকে বলেছিলেন, এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সমস্ত প্রাসঙ্গিক দলিল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ দেয়া হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করার পরেও ফাঁসির সাজা কার্যকরের জন্য ১৪ দিন সময় দিতে হয়। এক আসামীর প্রাণভিক্ষার আর্জির জন্য এই মামলা আরও পিছিয়ে গিয়েছে।
তবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা। গত ১৬ জানুয়ারি এদের তিহারের তিন নম্বর সেলে পাঠানো হয়েছে। এখানেই এদের ফাঁসিতে ঝোলানো হবে।
এমন প্রেক্ষাপটে চারজন আত্মহত্যা করতে পারে বা আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তিহার কর্তৃপক্ষ। এই চারজনের একজনও এরকম কিছু করে ফেললে তা বিশাল বড় ইস্যু হবে তা জানেন জেল কর্তৃপক্ষ। তাই কোনরকম ঝুঁকি নিতে রাজি নন তারা।
২৪ ঘণ্টা কারারক্ষী ও সিসিটিভির নজরদারিতে রয়েছে চার অপরাধী। এর আগে নির্ভয়া কাণ্ডে আরও এক অপরাধী রাম সিং জেলের শৌচাগারে আত্মহত্যা করেছিল।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের নির্ভয়াকে ধর্ষণ ও ভয়াবহ নির্যাতন করেছিল ছয় অভিযুক্ত। ২৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে মারা যায় নির্ভয়া। অভিযুক্ত ৬ জনকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীনই তিহার জেলে আত্মহত্যা করেন রাম সিংহ।
অন্য অভিযুক্ত অপরাধের সময় ছিল নাবালক। জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড তাকে সর্বোচ্চ তিন বছর হোমে রেখে সংশোধনের নির্দেশ দেয়। সেই সাজার মেয়াদ শেষে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে তখনকার সেই নাবালক।