চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তৎপর মার্কিন রাষ্ট্রদূত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বেশ তৎপর ও উদ্যোমী ভূমিকা পালন করছেন ঢাকায় সদ্য নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট আর্ল মিলার।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাট বিদায় নেয়ার আগেই দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে নতুন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মিলারের নাম ঘোষণা করেন। এরপর গত ১৩ অক্টোবর মার্কিন সিনেটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে অনুমোদন পান আর্ল রবার্ট মিলার।

বাংলাদেশে আসার আগে আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন মিলার। তিনি বতসোয়ানায় সরকার পরিবর্তনের সময় সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে মার্কিন কনস্যুলেটে কনসাল জেনারেল ছিলেন মিলার। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই কর্মকর্তা ওয়াশিংটন, সান ফ্রান্সিসকো, মিয়ামি ও বোস্টনে কাজ করেছেন। এছাড়া ভারত, ইরাক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও এল সালভেদরের মার্কিন দূতাবাসে বিভিন্ন পদে দায়িত্বপালন করেছেন মিলার।

১৮ নভেম্বর রোববার ঢাকায় আসার পর থেকেই সরকারি ও বিরোধী দল, পেশাজীবী শ্রেণি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিভিন্ন এনজিও সংস্থাসহ নানা পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনা, সাক্ষাত ও বৈঠক করছেন মিলার।বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন দেখতে উদগ্রীব অভিজ্ঞ এই মার্কিন কূটনৈতিক।

সে কথা তিনি প্রতিটি দলের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য ছাড়াও ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের অফিসিয়াল পেজেও নিয়মিত প্রকাশ করছেন।

আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে তিনি পৃথক বৈঠক করেন। নিয়মিত অংশগ্রহণ করেন নানা অনুষ্ঠানে। শুধু তাই নয় তিনি মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতেও কার্পণ্য করছেন না।

তার প্রথম বক্তব্যই ছিলো,-‘বাংলাদেশে সংঘাতহীন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’।

তারই ধারাবাহিকতায় মিলার সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘শান্তিতে বিজয়’ শীর্ষক এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। যা গতকাল  দূতাবাসের অফিসিয়াল পেজে প্রকাশ করা হয়।

সেখানে মিলার বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সাফল্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নাগরিকদের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ এবং তাদের মুক্তভাবে কথা বলতে পারার উপর নির্ভর করে। আমরা আশা করি বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ এবং উৎসাহী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

গত ২২ ডিসেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং সর্ব প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থা, নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিবেশ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন।

তিনি কলা ভবন, টিএসসি সহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্পটে ঘুরে শিক্ষার্থীদের মনোভাবও জানার চেষ্টা করেন এবং আমেরিকায় অধ্যয়ন করা বাংলাদেশি কয়েকজন অ্যালামনাইয়ের সাথেও তিনি নির্বাচন অবস্থা জানার চেষ্টা করেন।

এরপর সন্ধ্যায় বক্তব্য রাখেন টিএসসিতে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক এনজিও সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনার এর সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজিত ‘শান্তিতে বিজয়’ বিতর্ক অনুষ্ঠানে।

টিএসসির সেদিনের বক্তব্যে মিলার যুবকেরাই পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, পরিবর্তনের জন্য সংখ্যা কোনো বিষয় না। আমরা চাই কর্মোদ্দীপন ও উৎসাহী যুবসমাজ, যারা পৃথিবীকে পরিবর্তন করবে।

প্রসঙ্গত, ডেমোক্রেসি ইন্টারনেশনাল বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৬ মাস ধরে শান্তিতে বিজয় কর্মসূচি পালন করেছে। তারা বাংলাদেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে গ্রামীণ পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে।