প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরের দিন নির্ধারিত হওয়ার পর থেকেই দুটি বিষয়ে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে। এর একটি তিস্তা চুক্তি, আরেকটি নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি। তিস্তা চুক্তি হোক সেটা যেমন এদেশের সবার মনের চাওয়া; তেমনই আবার নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে অনেকের মনেই কাজ করছে কিছুটা শঙ্কা আর ভয়। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, ভারত সফরে এই বিষয়ে কোনো চুক্তি হবে না, শুধু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে।
কিন্তু এখানে ভয়ের ঠিক কারণটা কি? সেটাই ঠিক বুঝতে পারছেন না নিরাপত্তা বিশ্লেষক সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ। চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, শুনছি সবাই এটা নিয়ে ভয় পাচ্ছে, তবে কেন ভয় পাচ্ছে; সেটা কিন্তু কেউ পরিষ্কার করে বলছে না। তবে আমি যতটুকু বুঝি অনেকে মনে করছে নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তি করলে ভারতীয় সৈন্যরা আমাদের দেশে চলে আসবে এবং দেশের উপর তাদের প্রভাব বিস্তার করা শুরু করবে।
আসলে কি তেমনটা হওয়ার কোনো সুযোগ আছে? এমন প্রশ্ন তুলে তিনি আরো বলেন, এর আগে চীন, রাশিয়া, বেলারুশের সঙ্গেও কিন্তু আমরা প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছি। সেসব নিয়ে তো কোনো কথা হয়নি। তাহলে আজ ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে এত কথা হচ্ছে কেন? এমনকি এবারও তো প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় আরো তো অনেকগুলো চুক্তি সই হচ্ছে, সেসব নিয়ে কি আর কোনো হইচই রয়েছে।
এই চুক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে সাবেক এ সেনাপ্রধান বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী। আর এটা তো মানতেই হবে যে তারা আমাদের থেকে বড় এবং স্বাবলম্বী। সন্ত্রাসবাদ এখন কারো একার সমস্যা নয়। সারাবিশ্বের সমস্যা। আর সেটার সমাধানও কেউ একা করতে পারবে না। নেপাল, ভুটান, ভারত সবার সহযোগিতাই প্রয়োজন হবে। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও ভারত অনেক এগিয়ে। তাই আমাদের ভালো থাকতে হলে, তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখতেই হবে।
“এর আগে ৯০ দশকের দিকে যখন বাংলাদেশকে বিনামূল্যে সাবমেরিন দেওয়ার কথা উঠেছিলো তখনও নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে সেটার বিরোধিতা করেন অনেকে। নিজেদের তথ্য পাচার হয়ে যাবে ভেবে সেটা আর নেওয়াও হয়নি। আজতো আমরা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সাবমেরিন কিনছি! তখন তাহলে সেটা নিলেই বরং দেশ ২০ বছর এগিয়ে যেতো।”
তাহলে ভবিষ্যতের কথা ভেবে আজ যে চুক্তি হচ্ছে সেটা নিয়ে মনের মধ্যে ভয় রাখার প্রয়োজনীতা কি এমন প্রশ্ন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষকের।