নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রূপপুরে পারমাণবিক শক্তি কার্যক্রম শুরুর জন্য বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে আইনগত ও অবকাঠামোগতভাবে শক্তিশালী করা হচ্ছে।
এ লক্ষ্যে পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৭১০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভায় এই প্রকল্পসহ মোট ১১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এই টাকার মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ৮ হাজার ৭৯২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। বৈদেশিক অনুদান থেকে যোগান দেওয়া হবে ২৬৭ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে যোগান দেয়া হবে ২ হাজার ৯২৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
সভা শেষে এসব তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
অনুমোদিত মোট ১০টি প্রকল্পের মধ্যে ২টি সংশোধিত। এর মধ্যে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশে ৪টি মেরিন একাডেমি স্থাপন (পাবনা, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর) (তৃতীয় সংশোধন)’ প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধন এবং অর্থ বিভাগের ৩ হাজার ৭১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি)’ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন আনা হয়েছে।
নতুন অনুমোদিত ৮টি প্রকল্পের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ৭২৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘কিশোরগঞ্জ (বিন্নাটি) পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর-টোক জেলা মহাসড়ককে যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প ও ৩৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা-আরিচা-মহাসড়কের আমিনবাজার, সালেহপুর ও নয়ারহাট নাম স্থানে ৩টি সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ১ হাজার ৭১০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারমাণবিক নিরাপত্তা তদারকিকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি ইনফ্রাস্ট্রাকচার উন্নয়ন’ প্রকল্প; বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ প্রকল্প; কৃষি মন্ত্রণালয়ের ২৫০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে বৃহত্তম রংপুর জেলার সেচ সম্প্রসারণ’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার বিভাগের ১ হাজার ৭২৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘পল্লী কর্মসংস্থান ও সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি প্রকল্প-৩ (আরইআরএমপি-৩) প্রকল্প; পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৫৫৭ কোটি ব্যয়ে ‘শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার পদ্মা শাখা নদীর ডান তীরের ভাঙন থেকে নওয়াপাড়া এলাকা এবং পদ্মা নদীর বাম তীরের বাঙন থেকে চরআত্রা এলাকা রক্ষা’ প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ৬৩২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর’ এ পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্প।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।