মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন শেষে এখন নিরঙ্কুশ বিজয়ের পথে অং সান সু চির দল এনএলডি। আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণায় ক্ষমতাসীন ইউএসডিপি’র চেয়ে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে এনএলডি। দলের এই জয়কে গণতন্ত্রের জাগরণ বলে উল্লেখ করেছেন সু চি।
এরই মধ্যে নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিয়েছে ক্ষমতাসীন ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি ইউএসডিপি। নির্বাচনে এনএলডির বিজয়ে সু চিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এখনও না আসলেও প্রাথমিক ফলাফলে এটা স্পষ্ট যে, মিয়ানমারের পরবর্তী ভাগ্য নির্ধারণ হতে চলেছে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী অং সান সু চির হাতেই। ভোটের আগেই আভাস মিলেছিল সু চির বিজয়ের।
এবারের নির্বাচনে ৯০টি রাজনৈতিক দলের ৬ হাজারেরও বেশি প্রার্থী ৪শ ৯৮টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। উভয় কক্ষ মিলে মোট ৪শ ৯৮টি আসনে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রথম দফায় নিম্ন কক্ষের ৩শ ৩০টি আসনের ৫৪টির ফল ঘোষণা করে, তার মধ্যে ৪৮ টিতেই বিজয়ী হয়েছে এনএলডি।
ভোটের প্রাথমিক ফলাফলে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সু চি। বলেছেন, সব ধর্ম-মত-গোষ্ঠীকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করাই তার লক্ষ্য। দলের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ আসন জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী তারা।
পার্লামেন্টের ৪শ ৪০ আসনের নিম্নকক্ষের ৩শ ৩০টি এবং উচ্চকক্ষের ২শ ২৪ আসনের ১শ ৬৮টিতে ভোট হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী উভয় কক্ষে বাকি আসনগুলো পূরণ করবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। সে ক্ষেত্রে এনএলডিকে সরকার গঠন করতে হলে দুই পরিষদ মিলে ৩শ ৩০টি আসন পেতে হবে।
বিজয় যে সু চির দলেরই তা আঁচ করতে পেরেই ইউএসডিপি নেতারা এরইমধ্যে পরাজয় মেনে নিয়েছেন। ওদিকে দলের জয়ে আনন্দ উল্লাস করছে এনএলডি’র সমর্থকরা। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় করছে হাজার হাজার কর্মী সমর্থক।
বর্তমান পার্লামেন্টের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের ৩০ জানুয়ারি। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবেন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে।
ধারণা করা হচ্ছে, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী উ থিনকেই প্রেসিডেন্ট করতে পারেন সু চি। নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত অং সান সু চি এ নির্বাচনে জয়ী হলেও স্বামী এবং পুত্র ব্রিটিশ নাগরিক বলে নতুন সংবিধান অনুযায়ী পেসিডেন্ট হতে পারবেন না তিনি। কিন্তু এ বিজয়ে সু চির ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের চেয়ে কম হবে না।
২৫ বছর আগের নির্বাচনে জিতেও ক্ষমতা বুঝে পাননি সু চি। এবার গণতন্ত্রের পূর্ণ বিজয়ের অপেক্ষা তাদের।