প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দেশজুড়ে ছাত্রলীগের ৫০ হাজার নেতা-কর্মী কাজ করবে। এ অভিযানে নেতৃত্ব দিবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ লক্ষ্যে কাজ করতে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এড. মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, ঢাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাবি শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স প্রমুখ। এতে সংগঠনের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন।
মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, আমরা এদেশকে স্বাধীন করেছি, সেটি থাকবে কিনা বা কী রকম থাকবে তা নির্ভর করবে তোমাদের উপর। এদেশের মানুষ নিরক্ষর থাকবে কিনা সেটা দেখবে তরুণরা। এত বড় কর্মসূচি এর আগে আর কোন ছাত্র সংগঠন হাতে নেয়নি। কাজ শুরু কর, দেখবে শেষ হয়ে যাবে। রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া এত বড় প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, দেশের নিরক্ষর লোকজনকে স্বাক্ষর শেখাতে এত বড় পরিসরে নেওয়া এ কর্মসূচি খুবই বিরল। যারা মাঠে কাজ করবে তাদের নিয়ে মতবিনিময় সভাও প্রশংসনীয়। স্বাক্ষরতা অভিযানের মাধ্যমে নিরক্ষর লোকদের অধিকার বাস্তবায়নের সুযোগ মিলবে। আলোচনায় ওঠে আসা ছাত্রলীগ নেতাদের দাবির সমালোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, প্রণোদনা বিভিন্ন রকম হয়। আদর্শিক, আর্থিক ও মানসিক। ছাত্রলীগকে আদর্শিক প্রণোদনা নিয়ে কাজ করতে হবে।
সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, আমাদের হতাশ হওয়ার কোন কারণ নেই। আমরা যদি একজন নিরক্ষর লোককেও অক্ষরজ্ঞান দিতে পারি তবে আমাদের অভিযান সফল হবে।
এস এম জাকির হোসাইন বলেন, যদিও ইউনেস্কোর সংজ্ঞায় বলা আছে যারা পড়তে, লিখতে ও বুঝতে পারে না তারাই নিরক্ষর। কিন্তু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এদেশে যারা শুধুমাত্র স্বাক্ষর করতে পারে তারাই স্বাক্ষরতার দলে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, দেশে অনেক শিক্ষিত যুবক চাকরি পায়না। অনেক সময় টাকার অভাবে তারা ঢাকায় চাকরির পরীক্ষাও দিতে আসতে পারে না। চাকরি না পাওয়ার হতাশা নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে অন্তরায়। তাই প্রতিটি বিভাগে চাকরির পরীক্ষাগুলো নেওয়া হলে শিক্ষিত যুবকরা সমৃদ্ধ দেশ বিনির্মাণে কাজ করতে পারবে।
ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, আমাদের যে ৫০ হাজার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আছে তাদের প্রত্যেকে একজন করে অক্ষরজ্ঞান শেখালে ৫০ হাজার মানুষ নিরক্ষরতা মুক্ত হবে। সারাদেশে ছাত্রলীগের কমিটি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে আটকে থাকার নীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, এই পরিকল্পনাকে সফল করতে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট ঢাবি ছাত্রলীগকে মডেল হিসেবে সামনে রেখে কাজ করতে পারে।