৩ জুন ২০১০ সালের এই দিনটি ভয়াল হয়ে দেখা দিয়েছিলো পুরান ঢাকার নবাব কাটারার অলিতে-গলিতে।
ছুটে বেড়ানো আগুনের হল্কায় সেদিন যেনো পুরো এলাকাটি নরকে পরিণত হয়েছিলো। আগুনে পুড়ে অঙ্গার হতে হয়েছিলো ১২৮ জনকে। দগ্ধ হয়েছিলেন ২’শ জন।
পুরান ঢাকার নবাব কাটারার ৪৩/১ নম্বর বাড়িটির নিচতলায় ফোম তৈরির উপকরণ টলুইন ডাই আইসো সায়ানাইড ও মিথাইল ক্লোরাইডের গুদাম ছিলো। সেখান থেকে যে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত, যা মুহূর্তে বহু মানুষকে স্বজনহারা করেছিল।
আজ ছয় বছরের মাথায় নিমতলীর সেই ৫তলা বাড়িটিতে আগুনে পুড়ে যাওয়ার কোন চিহ্ন নেই। নীচতলা থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত পুরো বাড়িটি এই কয়েক বছরে অনেক পাল্টে গেছে। বাড়ির তিন তলায় দিদার, চতুর্থ তলায় ফারুক আহমেদ ও পঞ্চম তলায় গুলজার বসবাস করেন। তবে স্বজন হারানোর বেদনায় তাদের তাড়িয়ে বেড়ায় সব সময়।
অগ্নিকাণ্ডের পর পরিবার পরিজন হারিয়ে নিঃস্ব হওয়া রুনা, রত্না ও শান্তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুকে টেনে নেন, ঘোষণা দেন তারা তার নিজের সন্তান। এরপরই গণভবনে নিজে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রী তার তিন কন্যার বিয়ে দেন।
সেই রুনা,রত্না এবং শান্তার ঘর আলো করেছে তাদের সন্তানরা। তাদের একজনের নাম আলী মর্তুজা আযান, দ্বিতীয় জনের নাম শ্রদ্ধা, তৃতীয় জনের নাম রমাদান এবং চতুর্থ জনের নাম আদর।
নিমতলী ট্র্যাজেডি স্মরণে নির্মিত সৌধকে ‘সচেতনতার প্রতীক’ বলা হচ্ছে। অথচ প্রশাসনিক হম্বিতম্বি আর প্রতিশ্রুটির বাণী এখনো নিমতলীর গলিতেই পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কারণ এখনো নিমতলীর বাসা-বাড়ির নিচে মৃত্যুফাঁদ হয়ে আছে রাসায়নিকের গুদাম।