ব্রায়ান লারার অপরাজিত ৪০০ রানের সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসের সাক্ষী তিনি। অস্ট্রেলিয়ার ৪৩৪ তাড়া করে সাউথ আফ্রিকার অবিস্মরণীয় ওয়ানডে ম্যাচ জয়েরও। সেই আলিম দার নিজেই এখন বিশ্বরেকর্ডের মালিক। অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে টপকে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের আম্পায়ার স্টিভ বাকনারের সবচেয়ে বেশি ১২৮ টেস্ট ম্যাচ পরিচালনার রেকর্ড।
পার্থে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্ট। দুই দেশের গোলাপি টেস্টের মধ্যে দিয়েই এই রেকর্ড করেন ৫১ বছরের পাকিস্তানি আম্পায়ার। তিনি এই নিয়ে ১২৯তম টেস্ট খেলাচ্ছেন।
ম্যাচের আগেই আইসিসিকে দেয়া সাক্ষাতকারে আলিম দার বলেছেন, ‘এটা একটা এমন মাইলস্টোন, ক্যারিয়ার শুরু করার সময় এই রকম কিছু করব, কখনো ভাবিনি। মাঠে যখন আম্পায়ারিং করতে নামব, তখন একটা অন্যরকম অনুভূতি অবশ্যই হবে। আমার শহর গুজরানওয়ালা থেকে হাজার মাইল দূরে দাঁড়িয়েও অনেকের শুভেচ্ছা আমাকে ছুঁয়ে যাবে।’
আম্পায়ার হিসেবে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলানো শুধু নয়, ওয়ানডে ক্রিকেটেও রেকর্ডের মুখে দাঁড়িয়ে আলিম। সাউথ আফ্রিকার রুডি কোয়ের্টজেন সবচেয়ে বেশি ২০৯ ম্যাচ খেলিয়েছেন। দু’ম্যাচ পেছনে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানি আম্পায়ার।
আলিম বলেছেন, ‘স্টিভ বাকনার বরাবর আমার আইডল। যাকে সামনে রেখে এগোনোর চেষ্টা করেছি, সেই তারই রেকর্ড ভাঙছি, এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে।’
ক্রিকেটার হিসেবেই এক সময় পরিচিত ছিল পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে। ১৭টা প্রথম শ্রেণির ম্যাচও খেলেছেন তিনি। ছিলেন মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান ও লেগস্পিনার। কিন্তু ক্রিকেটার হিসেবে খুব বেশি দূর এগোতে না পারলেও আম্পায়ারিংকেই পেশা করে নিয়েছিলেন।
২০০০ সালে পাকিস্তানের মাটিতেই প্রথম খেলিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ওই ওয়ানডে ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথম টেস্ট খেলিয়েছিলেন ২০০৩ সালে, ঢাকায়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের ম্যাচ ছিল সেটা।
১৯ বছর ধরে এই পাক আম্পায়ারের দারুণ উত্থান হয়েছে সব ফরম্যাটেই। ৪৬টা টি-টুয়েন্টি ম্যাচও খেলিয়েছেন আলিম দার। পাঁচবার হয়েছে আইসিসির সেরা আম্পায়ার। সেই তিনিই বলেছেন, ‘প্রায় দু’দশক ধরে আম্পায়ারিং করছি। অনেক অবিস্মরণীয় ঘটনাই দেখেছি চোখের সামনে। তার মধ্যে অন্যতম হল টেস্টে লারার ৪০০ নটআউট আর অস্ট্রেলিয়ার ৪৩৪ তাড়া করে সাউথ আফ্রিকার জয়।’
আইসিসির আম্পায়ার ও রেফারিদের সিনিয়র ম্যানেজার আদ্রিয়ান গ্রিফিথ বলেছেন, ‘ক্রিকেট এখন এতটাই আধুনিক হয়ে গেছে যে, কোনো একজন আম্পায়ারের পক্ষে এতো ম্যাচ পরিচালনা করা সহজ নয়। সেখানে আলিমের আম্পায়ািরং শিক্ষণীয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী দিনেও আলিম দার আম্পায়ারিংকে আরও এগিয়ে যাবেন।’