চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নিখোঁজের দুই সপ্তাহ পরও মারুফ জামানের ক্লু পায়নি পুলিশ

নিখোঁজের দুই সপ্তাহ পার হলেও ভিয়েতনামের সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের কোন ক্লু পায়নি পুলিশ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, মারুফ জামানকে উদ্ধারের জন্য সবাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, পুলিশ এখনও তার কোন সন্ধান পায়নি, তারা অনুসন্ধান অব্যাহত রেখেছেন।

গত ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে মেয়েকে আনতে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান। এ ঘটনায় পরদিন তার মেয়ে সামিহা জামান ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ২১৩) করেন।

নিখোঁজের দুই সপ্তাহ পর সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের উদ্ধার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে, আমরা ডিজিটাল পদ্ধতি সহ সব রকমের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু কোনও ক্লু পাওয়া যাচ্ছে না।

মারুফ জামানের পরিবার জানায়, গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটা ৪৫ মিনিট নাগাদ বাসার ল্যান্ড ফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করেন মারুফ জামান। বাসার গৃহপরিচারিকাকে তার কম্পিউটার নিতে কেউ একজন আসবেন বলে জানান।

এর কিছুক্ষণ পর রাত আটটা পাঁচ মিনিটের দিকে তিনজন সুঠামদেহী ভদ্রলোক বাসায় এসে তার ল্যাপটপ, বাসার কম্পিউটারের সিপিইউ, ক্যামেরা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এসময় তারা মারুফ জামানের ঘরে তল্লাশিও চালায়। তখন যোগাযোগ করা হলে মারুফ জামানের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

নিখোঁজ হওয়ার আগ মুহূর্তে যে তিন ব্যক্তি মারুফ জামানের বাসায় প্রবেশ করেছিল, সিসিটিভি ক্যামেরায় তাদের ছবি থাকার পরও কেন তাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. ফজলুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ওই তিন ব্যক্তি সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নিজেদের চেহারা আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। এতে বোঝা যায়, তারা আগে থেকেই সিসিটিভি সম্পর্কে জানতেন। এছাড়া, চেহরা এত অস্পষ্ট যে ওই ফুটেজ দিয়ে তাদের শনাক্ত করাও অনেক কঠিন। তারপরও আমরা সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

ধানমণ্ডির ৯/এ সড়কের এই বাসার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন মারুফ জামান

ধানমণ্ডির ৯/এ সড়কে নিজের একটি ফ্ল্যাটে ছোট মেয়ে সামিহা জামানকে নিয়ে থাকতেন বিপত্নীক মারুফ; আর থাকতেন দুজন গৃহকর্মী। তাদের একজন ১৪ বছর ও অপর জন প্রায় সাড়ে সাত বছর ধরে মারুফ জামানের বাসায় কাজ করেন।

সামিহা কয়েক সপ্তাহ আগে বড় বোনের কাছে বেড়াতে বেলজিয়াম গিয়েছিলেন। ফিরে আসার পর তাকে আনতেই সোমবার সন্ধ্যায় নিজের গাড়ি নিয়ে বিমানবন্দর রওনা হয়েছিলেন মারুফ। তারপর থেকে তার সন্ধান মিলছে না।

নিখোঁজ মারুফ জামানের মেয়ে সামিহা জামান বলেন, পুলিশ বাবার অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানতে পারে নি এখনো, তারা বলছেন বাবাকে উদ্ধারের সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি শুধু আমার বাবাকে ফেরত চাই।

মারুফ জামান ২০০৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি কাতারের রাষ্ট্রদূত, যুক্তরাজ্যে কাউন্সেলর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পররাষ্ট্র ক্যাডারে আত্মীকরণ হন। সেনা কর্মকর্তা (ক্যাপ্টেন) এরপর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশনে দায়িত্ব পালন শেষে অবসর জীবন যাপন করছিলেন।