ইংল্যান্ডের টানা দুই হার বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মতো পাকিস্তানের ডুবতে বসা সেমিফাইনালের স্বপ্নও জাগিয়ে তুলেছে। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার পথে অন্যতম কঠিন বাধার নাম নিউজিল্যান্ড। কয়েকঘণ্টা পর দারুণ ছন্দে থাকা কিইউইদের বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। উইলিয়ামসনদের হারাতে পারলে শেষ চারের আশা আরও উজ্জ্বল হবে আমির-সরফরাজদের।
ছয় ম্যাচ শেষে নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট ১১। পাকিস্তানের ৫। তবে তিন ম্যাচ হাতে রেখে এখনো নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়নি। সেখানে পাকিস্তানও বাতিলের খাতায় যায়নি।
চলতি বিশ্বকাপে উড়ছে নিউজিল্যান্ড। ৬ ম্যাচের পাঁচটিতে জিতেছে কিউইরা। একটি ম্যাচে বৃষ্টির কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে। অপরাজিত থেকেই পাকিস্তানের বিপক্ষে নামছে কেন উইলিয়ামসনের দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় যে অস্ট্রেলিয়ার পর দ্বিতীয় দল হিসেবে তাদের সেমি নিশ্চিত করবে সেটি জানাই।
সেখানে বিশ্বকাপের চলতি আসরে বেশ অধারাবাহিক পাকিস্তান। তবে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে আগের ম্যাচে পাওয়া জয় এবং ইংল্যান্ডের টানা দুটি হার সরফরাজ-আমিরদের চাঙা করবে সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না।
দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তান কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। ১০৬ বারের সাক্ষাতে পাকিস্তানের ৫৪ জয়ের বিপরীতে নিউজিল্যান্ড জিতেছে ৪৮ ম্যাচে। ১টি ম্যাচ টাই হয়েছে এবং ৩টি ম্যাচ পরিত্যক্ত।
বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানও কথা বলছে পাকিস্তানের হয়ে। ৮ বারের সাক্ষাতে ১৯৯২ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ৬টিতে জিতেছে। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ড জিতেছে ২টিতে। প্রথম ও শেষ সাক্ষাতে কিউইরা জিতেছে। অন্য ছয়বার টানা জয় পেয়েছে পাকিস্তান। সর্বশেষ ২০১১ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারায় কিউইরা।
তবে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিউজিল্যান্ডের আধিপত্যের কথা বলছে। সর্বশেষ ১৩ বারের সাক্ষাতে পাকিস্তানকে ১২ বার হারিয়েছে তাসমান সাগরপাড়ের দেশটি।
বিশ্বকাপের চলতি আসরে নিউজিল্যান্ড এগিয়ে চলছে দুর্দান্ত গতিতে। পাকিস্তান চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। তবে পাকিস্তানকে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে ১৯৯২ বিশ্বকাপের গৌরবগাথা। সেবার এমন খাদের কিনারা থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার পথে নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল ইমরান খানের দল। সেমিফাইনালেও তাদের হারিয়ে ফাইনালে গিয়ে বিশ্ব জয় করে এশিয়ার দলটি। অতীত ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারে ৯২’র বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
ছন্দে থাকা নিউজিল্যান্ডের বোলাররা ফর্মে রয়েছেন। তবে ওপেনারদের ব্যর্থতা কিউইদের ভাবাচ্ছে। বোলারদের দুর্দান্ত নৈপুণ্যের পাশাপাশি টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান রস টেলর ও কেন উইলিয়ামসন ছন্দে থাকায় এখনো পর্যন্ত বড় কোনো পরীক্ষায় পড়তে হয়নি তাদের ব্যাটিং লাইনকে। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে কিউইদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে।
অন্যদিকে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টপ ও মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স পাকিস্তান শিবিরকে আশ্বস্ত করছে। মোহাম্মদ আমির, ওয়াহাব রিয়াজরাও রয়েছেন ছন্দে। ফলে নিউজিল্যান্ডেরও বড় পরীক্ষাই নেবে সরফরাজের দল।
টিম নিউজ
নিউজিল্যান্ডের একাদশে পরিবর্তন আনার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে সম্ভাব্য নকআউটের আগে ঝালিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে টিম সাউদিকে পরখ করে নিতে পারে টুর্নামেন্টের অপরাজিত দলটি।
মিডলঅর্ডার সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছে পাকিস্তান। পাঁচ নম্বর পজিশনে শোয়েব মালিকের জায়গায় নেমে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে দারুণ ইনিংস উপহার দিয়েছেন হারিস সোহেল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের উইনিং কম্বিনেশন ভাঙার সম্ভাবনা নেই।
সম্ভাব্য একাদশ
নিউজিল্যান্ড: কলিন মুনরো, মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিযামসন, রস টেলর, টম ল্যাথাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, জেমস নিশাম, মিচেল স্যান্টেনার, ম্যাট হেনরি/টিম সাউদি, লোকি ফার্গুসন ও ট্রেন্ট বোল্ট।
পাকিস্তান: ইমাম-উল হক, ফখর জামান, বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজ, হারিস সোহেল, সরফরাজ আহমেদ, ইমাদ ওয়াসিম, শাদাব খান, মোহাম্মদ আমির, ওয়াহাব রিয়াজ ও শাহিন আফ্রিদি।