আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর দেয়া শর্তের পক্ষে-বিপক্ষে রোববারের গণভোটে গ্রিসের জনগণের ‘না’-এর পক্ষাবলম্বনের প্রেক্ষিতে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন গ্রিক অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভ্যারোফাকিস। ঋণদাতাদের সাথে প্রায়শই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া ইয়ানিস তার ব্লগে এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সোমবার সকালে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
ইয়ানিস তার ব্লগে লিখেছেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইউ) সাথে গ্রিসের আলোচনায় আমার অনুপস্থিতিই যে ইউরোগ্রুপের কয়েকজন অংশীদারের আকাঙ্খা, সে বিষয়ে আমি সচেতন।
‘না’ ভোটের জয় ইউ’এর সাথে একটি চুক্তিতে পৌছাতে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন গ্রিক প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস।
রোববারের গণভোটে ‘না’-এর পক্ষে সমর্থন জানায় গ্রিসের জনগণ। আর এই ‘না’ এর ফলে ইউরোজোন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষেই রায় দিয়েছে তারা। ভোট গণনা শেষে, গ্রিসের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী ৬২ শতাংশ ভোট পড়েছে ‘না’-এর পক্ষে,আর ‘হ্যাঁ’ এর পক্ষে ৩৮ শতাংশ।
দাতাদের দেয়া আর্থিক সংস্কার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করায় গ্রিসের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস। তিনি বলেছেন, গ্রিকরা প্রমাণ করেছে গণতন্ত্র কখনো হুমকির সম্মুখিন হতে পারে না।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আরোও বলেন, গ্রিসের জনগণ ইউরোপের ঐক্য ও গণতন্ত্র বজায় রাখার পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। জনগণ যে রায় দিয়েছেন তা ই্উরোপের সঙ্গে বিরোধের জন্য নয় বরং এটি উপযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করার জন্য। আগামীকাল আমরা আবার আলোচনার টেবিলে ফিরে যেতে চাচ্ছি এবং আমাদের প্রাথমিক অগ্রাধিকার হচ্ছে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।
ফলাফলের পর নিজেদের জয় নিশ্চিত হওয়ায় আনন্দ-উল্লাস করেছে গ্রিসের সাধারণ মানুষ। জয় নিশ্চিত হওয়ায় এরইমধ্যে আগামী মঙ্গলবার থেকে গ্রিসের ব্যাংকগুলো খোলা রাখার কথা জানিয়েছেন গ্রিসের সরকারি কর্মকর্তারা। রোববারের গণভোটে ‘না’-এর পক্ষে জয় নিশ্চিত হওয়ায় পদত্যাগ করেছেন গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদল নেতা অ্যান্থনিস সামারাস।
ওদিকে, পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে আজ প্যারিসে জরুরি বৈঠকে বসবেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদ। এছাড়া চলতি সপ্তাহেই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা।