সিলেটে কথিত প্রেমিকের চাপাতির কোপে আহত খাদিজা আক্তার নার্গিসের অবস্থা এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। পরিবর্তন আসেনি তার ব্লাড প্রেসার ও পালসেও। তার চিকিৎসার দায়িত্ব সরকার নিয়েছে বলে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
স্কয়ার হাসপাতালের ‘মেডিসিন এন্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার’ বিভাগের কনসালট্যান্ট মির্জা নাজিমউদ্দীন তাকে বাঁচাতে সবাইকে প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার নার্গিসের মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার শেষে ডাক্তাররা জানিয়েছিলো তার বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ। এরপরই ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয় তাকে।
বুধবার হাসপাতালে নার্গিসকে দেখতে এসে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, অপরাধীকে শাস্তি দিতেই সরকার অবশ্যই পদক্ষেপ নিবে। যারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে তারা মানুষের কাতারে পড়ে না। এই ধরনের মানুষদের নিয়ে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ করা সম্ভব নয়। সরকারের যেখানে যতটা করা দরকার সেটা করবেন।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচারহীনতাই এমন ঘটনার কারণ। এই মামলার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা দরকার। সেজন্য দ্রুত চার্জশিট জমা দিতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এমন ঘটনাকে নৃশংস উল্লেখ করে আসামীর যাতে সুষ্ঠু বিচার হয় সেজন্য সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
নার্গিসকে দেখতে হাসপাতালে আসেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও।
সোমবার বিকেলে এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে খাদিজা আক্তার নার্গিসকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করে শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বদরুল আলম। বদরুল শাবি ছাত্রলীগের সহসম্পাদক।
এ ঘটনার পর এমসি কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলাকারী বদরুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। গণপিটুনিতে আহত বদরুলকেও ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নার্গিসের স্বজনরা জানান, তার মাথায় ৫-৬টি কোপ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন পরিস্থিতি ভালো না। কোপে মারাত্মক জখম হয়েছে নার্গিস।
ঘটনার পর নার্গিসকে প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মধ্যরাত পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচার হলেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার ভোরে অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে নার্গিসকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।