নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে, সহিংসতা ও নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ (এমজেএফ) বিভিন্ন মানবাধিকার, নারী ও শিশু সংগঠন।
আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে রোববার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক সম্মিলিত প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ সভায় এই আহবান জানানো হয়।
সমাবেশে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ”নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।শিশু ও নারী নির্যাতনের ঘটনায় আমরা আর চুপ থাকবোনা। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হবে।”
নারীরা কত ভাবে এবং কি হারে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন তা উপস্থাপন করে প্রতিবাদ সমাবেশে বলা হয়, নারী ঘরের বাইরে যেমন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, তেমনি হচ্ছেন পরিবারে তার সবচেয়ে আপন জনদের কাছ থেকে এবং কর্মক্ষেত্রে তার সহকর্মী ও কর্তৃপক্ষের দ্বারা।
সমাবেশে নারী নির্যাতনের বিভিন্ন পরিসংখ্যান টেনে বলা হয়, ২০১৫ সালে বিবিএস পরিচালিত নারী প্রতি সহিংসতা জরিপ অনুযায়ী গ্রামীণ বিবাহিত নারীদের মধ্যে শতকরা ৭৪.৮ ভাগ এবং নগর কেন্দ্রিক বিবাহিত নারীদের মধ্যে শতকরা ৭১.১ ভাগ সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
জানুয়ারি থেকে অক্টোবর ২০১৮ পর্যন্ত ৯টি সংবাদপত্র থেকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী গত দশ মাসে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪০ জন মেয়ে শিশু। গত কয়েকমাসে ১৪২০ জন নারী শিকার হয়েছে ধর্ষণের।
এছাড়াও যৌন হয়রানীর শিকার ১১২ জন শিশু ও নারী। পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ১৬০ জননারী।
বিশ্বব্যাপী এই প্রতিরোধ পক্ষ পালন করা হয় ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। নারী ও মেয়ে শিশুদের প্রতি জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা দূরকরা এবং সবরকমের বৈষম্য কমিয়ে আনার দাবিকে জোড়ালো করার লক্ষ্যে এই প্রতিরোধ পক্ষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন “এখনই সময়, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধের” এই বিষয়কে সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে ২১টি সংগঠন সম্মিলিত হয় শহীদ মিনারের পাদদেশে।
সমাবেশে এসিড সারভাইভার্স ফাউন্ডেশন, আইন শালিস কেন্দ্র, পিএসটিসি, ওয়েভ ফাউন্ডেশন, সিপিডি, ডিএএম, নারী মৈত্রী, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন, ভাফুসড, সহায়, সবুজের অভিযান, মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা, আওয়াজ ফাউন্ডেশন, এএসডি, নারীপক্ষ, সেক্স ওয়ার্কার নেটওয়ার্ক, এক রঙা এক ঘুড়ি, গ্লোবাল নেইবারস, ভার্ক, কর্মজীবী নারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।