কানাডীয়ান সেনাবাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য গত এক বছরে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে। এর মধ্যে যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নারী সদস্যের সংখ্যা পুরুষ সংখ্যার চেয়ে চারগুণ বেশি। শতকরা হিসেবে ৪.৮ শতাংশ নারীসেনা সদস্য কোনো না কোনো ভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। অপরদিকে ১.২ শতাংশ পুরুষ সেনা সদস্য যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।
সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার পরিসংখ্যানে উঠে আসা আতঙ্কজনক এই তথ্যের কথা জানিয়েছে নতুন দেশ পত্রিকা।
৪৩ হাজারের বেশি সেনা সদস্য স্বেচ্ছায় স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার এই সমীক্ষায় অংশ নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।
স্ট্যাটিসটিক্স কানাডার এই রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার পর কানাডার সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল জনাথন ভান্স বলেছেন, প্রকাশিত তথ্যে তিনি খুবই বিরক্ত এবং বিব্রত। তিনি বলেন, অভিযুক্তদের সামরিক বাহিনী থেকে বহিষ্কারসহ কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেনাপ্রধান বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার ঘটনাটি বিব্রতকর বাস্তবতা। আমরা এটি বন্ধ করার চেষ্টা করছি। হয়রানির শিকার হয়েও যারা অভিযোগ করেননি, তাদের আশ্বস্ত করে সেনাপ্রধান বলেন, যৌন হয়রানি করেছে- এমন কোনো সেনাসদস্যকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
যৌন হয়রানির শিকার হওয়া সেনাসদস্যদের সিংহভাগই রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে অস্থায়ীভাবে কর্মরত। বেসামরিক কর্মস্থলের সঙ্গে তুলনা করে স্ট্যাটিসটিক্স কানাডা জানাচ্ছে, বেসামরিক কর্মস্থলের চেয়ে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার সংখ্যা বেশি। বেসামরিক কর্মস্থলে মাত্র ০.৯ শতাংশ নারী পুরুষ গত বছর যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
যৌন হয়রানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটেছে অনভিপ্রেতভাবে শরীরে হাত দেওয়ার ঘটনা, শতকরা হিসেবে ১৩ শতাংশ। অন্যান্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে যৌন আক্রমন, সম্মতি ব্যতিরেকে যৌন সম্পর্ক স্থাপন। এই হিসাবটা নিয়মিত বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ঘটা হয়রানির ঘটনার। এর বাইরে রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত সেনা সদস্যদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের হয়রানির ঘটনা ঘটেছে।
নিয়মিত বাহিনীর সদস্যদের ১২ শতাংশই বলেছেন তারা একাধিকবার নানা ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। অপরদিকে ৭৭ শতাংশের অভিযোগ অনভিপ্রেতভাবে তাদের শরীরে হাত দেওয়া হয়েছে। অনভিপ্রেতভাবে শরীরে স্পর্শ করার শিকার হয়েছেন সর্বাধিক সংখ্যক নারী সদস্য।
যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নারীদের ৪৯ শতাংশের অভিযোগ তারা সুপারভাইজার কিংবা সিনিয়র র্যাংকের অফিসারের হাতে হয়রানির শিকার হয়েছেন। অপরদিকে পুরুষদের চিত্রটা ভিন্ন। ৫৬ শতাংশ পুরুষের দাবি তারা সহকর্মীদের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। ক্ষুদ্র একটা অংশ দাবি করেছেন, তারা সেনাবাহিনীতে কর্মরত স্বামী বা স্ত্রী, কমন ল পার্টনার বা প্রেমিক প্রেমিকার হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।