নারীমুক্তির প্রধান বাধা যদি হয় পুরুষ তবে নারীমুক্তির পথপ্রদর্শকও পুরুষ বলে উল্লেখ করে আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত আরা বলেছেন: নারীর ক্ষমতায়নে সর্বাগ্রে পুরুষ সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে দক্ষিণ বাংলা নারী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস -২০১৯’ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিচারপতি জিনাত আরা বলেন: জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে নারীর সমান অধিকারের বিষয়টি সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন আইনে নারী সুরক্ষার বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে এবং নারী নিরাপত্তায় বিশেষ বিশেষ আইন প্রনয়ণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন: বাংলাদেশে আজ সর্বত্র নারীর জয় জয়কার শুরু হয়েছে। শিক্ষা দীক্ষায়, সাহসিকতায়, খেলাধুলায়, সৃষ্টিশীল কাজে বাংলাদেশের নারীগণ আজ সামনের কাতারে। আমাদের নারীগণ আজ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষা, সশস্ত্র বাহিনী, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীতে উচ্চপদে সমাসীন। উন্নয়নের গতিধারায় আজকে বাংলাদেশের নারীরা যেভাবে উৎপাদনের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে নিজেদের সমর্পণ করেছে তা যেমন সম্মৃদ্ধির নিয়ামক আবার তা অর্থনীতির অগ্রযাত্রারও চালিকা শক্তি। তারপরও নারীরা এখনো বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। পরিবারের মধ্যে, কর্মস্থলে, পরিবহন, যাতায়াত ব্যবস্থায় বিভিন্নভাবে নানা রকম হয়রানি ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে।
বিচারপতি জিনাত আরা বলেন: সারা বিশ্বে নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে নারী দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সকলে যে যার অবস্থান থেকে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করলে এবং নারীর অর্থনৈতিক সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির পথ সুগম হলেই শুধুমাত্র এ দিবস তার স্বার্থকতা খুঁজে পাবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার বলেন: ১৬ কোটি জনসংখ্যার ৮ কোটি নারী। এই নারীদের পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশের নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়নে সরকার গুরুত্বের সাথে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ফারজানা ইসলাম বলেন: ‘আমাদের সমাজ নারী-পুরুষের সমতার একটি সমাজ। যেখানে নারীর ক্ষমতায়ন কথাটি বারবার ঘুরে ফিরে আসে। তবে এক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন হচ্ছে একটি প্রক্রিয়া। নারীর ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়াটি হচ্ছে, আপনার নিজের সিদ্ধান্ত, নিজের চিন্তা, আপনার নিজের ইচ্ছাকে বাস্তবায়ন করতে পারবার ক্ষমতা। নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়ায় যিনি নিরন্তর লড়াই করছেন তার পাশে আমাদের থাকতে হবে।’
দক্ষিণ বাংলা নারী আইনজীবী পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগমের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।