২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বিকেলে অপহৃত হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জন। তিন দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায় শীতলক্ষ্যা নদীর শান্তির চর এলাকায়। নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত ওই ৭ খুনের মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার কথা সোমবার (১৬ জানুয়ারি)। ৩০ নভেম্বর ২০১৬ দু’টি মামলায় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ আসামির উপস্থিতিতে আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন। অন্য আসামীদের মধ্যে আছেন র্যাবের চাকুরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা– লেফটেনেন্ট কর্নেল (বরখাস্ত) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর (বরখাস্ত) আরিফ হোসেন এবং লেফটেনেন্ট কমান্ডার (বরখাস্ত) এম এম রানা। ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল চার্জশিট, ওই বছরের ১২ নভেম্বর ভারত থেকে নূর হোসেনকে দেশে ফিরিয়ে আনা, আদালতে সাক্ষীদের চোখ রাঙানি, বাদী পক্ষকে হুমকি, অন্যতম আসামী তারেক সাঈদের অসুস্থতার নাটকে হাসপাতালে ভর্তি, কাঠগড়ায় ভেতরে নূর হোসেনের মারামারিসহ অনেককিছু দেখেছে এ মামলা। হুমকির মুখে ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কাঢ আছে বাদী পক্ষ। তবে, রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে: ১২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০৬ জনের সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্কে প্রমাণ হয়েছে যে মামলায় অভিযুক্তরা সবাই ৭ জনকে অপহরণ থেকে শুরু করে হত্যা, গুমসহ পুরো কার্যক্রমে জড়িত। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে চলা মামলা, তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রমের পরে বহুল প্রতিক্ষীত রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। নানা কারণে নারায়ণগঞ্জ বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে, আর আইনের মারপ্যাঁচ আর বিচারিক কার্যক্রমে জনগণের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে দেশের সাধারণ মানুষ শঙ্কা নিয়ে মামলার চূড়ান্ত ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছে। মামলার রায়ে যাই হোক, যে ৭ জন হারিয়ে গেছেন তারা কোনোদিনও ফিরে আসবেন না, তাদের পরিবারও কোনো দিন ফিরে পাবেন না তাদের প্রিয়জনকে। স্বজন হারানো ৭ জনের পরিবার ও দেশের জনগণের সঙ্গে আমাদেরও আশাবাদ, বিচারিক রায়ে অভিযুক্তরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে, ন্যায়বিচার পাবে নিহতদের পরিবার আর এর মাধ্যমে আইনের শাসনের উপর আরো আস্থাশীল হবে মানুষ।