জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গনে কড়াকড়ি নিরাপত্তার মধ্যে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের রেজিস্ট্রি খাতায় নাম লিখে এবং আইনজীবীদের নামের তালিকা মিলিয়ে এজলাসে ঢুকতে হয়েছে।
এদিন সকাল থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত চত্ত্বরে।
সকাল নয়টার দিকে পুলিশের কাছে থাকা নামের তালিকা দেখে দেখে আইজীবীদের আদালতে প্রবেশ করার অনুমতি দেয়। ওই তালিকায় দুইপক্ষের প্রায় পাঁচশত আইজীবীর নাম রয়েছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে একজন করে রিপোর্টারকে নাম লিখে আদালতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত ৫ এ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ এই মামলার আসামী ছয় জন।
এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি এই মামলার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হলে বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো: আখতারুজ্জামান রায়ের জন্য আট ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই জরুরি অবস্থার মধ্যে রমনা থানায় এই মামলাটি করে দুদক।
তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার বিএনপি’র সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এরপর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালত খালেদাসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪০৯ এবং দুদক আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে।
ছয় আসামীর মধ্যে খালেদা জিয়া জামিনে ছিলেন। আর বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
আলোচিত এই মামলায় দুদক ও আসামিপক্ষ আদালতে মোট ১৬ কার্যদিবস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে। আর মোট ২৩৬ কার্যদিবস শুনানির পর মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে।
খালেদা জিয়ার অনাস্থার কারণে উচ্চ আদালতের নির্দেশে এর আগে তিনবার এই মামলার বিচারক বদল হয়েছে।