বিকেএসপির-৪ নম্বর মাঠে ম্যাচের প্রথম ইনিংস পর্যন্ত সবটুকু আলো কেড়ে রেখেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের রেলিগেশন পর্বে অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেছেন কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের এ ব্যাটসম্যান। চলতি মৌসুমে আশরাফুলের যেটি চতুর্থ সেঞ্চুরি। সেটিকে অবশ্য ম্লান করে দিয়েছেন শাহরিয়ার নাফীস ও সালমান হোসেন। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে কলাবাগানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে অগ্রণী।
নাফীসের ১০৯ ও সালমানের ৮৩ রানের ইনিংসে ২৪৭ রানের লক্ষ্যে অগ্রণী ব্যাংক পৌঁছায় ৪৫.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে।
নাফীসের ১৪২ বলে ১০৯ রানের ইনিংসে ১৩টি চার ও দুটি ছয়ের মার। জয় থেকে যখন ৩০ রান দূরে, আশরাফুলের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এ ওপেনার। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে রাউন্ড রবিন লিগের শেষ ম্যাচে নাফীস খেলেছিলেন ৮২ রানের ইনিংস।
নাফীসের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমে ঝড় তুলেছিলেন সৌম্য সরকার। তবে বেশিক্ষণ টেকেনি। ১৯ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ২৪ রান করে নাহিদ হাসানের বলে সাজঘরে ফিরেছেন। দলের রান তখন ৪৫। তিনে নামা সালমানের সঙ্গে নাফীসের জুটি ১৭২ রানের। দলীয় ২১৭ রানের মাথায় মাহমুদুল হাসানকে ক্যাচ দিয়ে নাফীস ফিরলে ভাঙে অসাধারণ জুটিটি।
জয়েরবন্দরে পৌঁছার ঠিক আগে নাহিদের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন সালমান। ৯৩ বলের ইনিংসে ছিল ১১টি চারের মার। জয় থেকে ৯ রান দূরে থাকতে আশরাফুলের দ্বিতীয় শিকার হন ধীমান ঘোষ (৬)। জাহিদ জাভেদ ৬ ও শামসুল ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেন।
আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আশরাফুলের সেঞ্চুরি ও তাইবুর রহমানের ৮২ রানের ইনিংসে ভর করে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান তোলে কলাবাগান। ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দলটি। সেখান থেকে আশরাফুল-তাইবুর ১৬৩ রানের জুটিতে ইনিংসের ভিত আনেন।
৯৩ বলে ১০টি চারে ৮২ রান করা তাইবুর তখন আল-আমিন হোসেনের বলে উইকেট দিলে ভাঙে বড় জুটি। শেষদিকে ঢাকা লিগে খেলা নতুন ক্রিকেটার রিয়াজুল হুদা ১৩ বলে তিন ছক্কায় ২৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেললে কলাবাগান পায় আড়াইশ’র কাছাকাছি সংগ্রহ।
আশরাফুলের ১৩৭ বলের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ২টি ছক্কা। এই সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে চলতি লিগে ব্যক্তিগত ৫০০ রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন ফিক্সিংয়ের দায়ে তিন বছর নিষিদ্ধ থাকা জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। ১৩ ম্যাচে আশরাফুলের রান ৫৬৩। চার সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে একটি ফিফটি। মজার ব্যাপার হল সেঞ্চুরি, ফিফটি সবগুলোই বিকেএসপির মাঠে।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় অ্যাশ এবার চার নম্বরে। আশরাফুলের উপরে আছেন আব্দুল মজিদ (৬০৯), নাঈম ইসলাম (৬১১), অশোক মানেরিয়া (৬৪৯)। আশরাফুলের দলের সামনে রয়েছে আর একটি ম্যাচ। শেষ ম্যাচটি ব্রাদার্সের বিপক্ষে। প্রথম বিভাগে নামায় কলাবাগানের সঙ্গী কে হয় সেটিই দেখার।
আশরাফুলের দল কলাবাগানের অবনমন নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। আগামী মৌসুমে কলাবাগানের পাশাপাশি কারা প্রথম বিভাগে নেমে যায় সেটিই দেখার। অগ্রণী না ব্রাদার্স ইউনিয়ন তার অপেক্ষা। তিন দল নিয়ে চলছে রেলিগেশন লিগ। যারা একে অন্যের বিপক্ষে একবার করে মুখোমুখি হবে। প্রথম ম্যাচে অগ্রণী জয় তুলে শুভসূচনা করেছে। অগ্রণী ও ব্রাদার্স উভয় দলই ৮ পয়েন্টে করে নিয়ে রাউন্ড রবিন লিগ শেষ করে। সবচেয়ে তলানিতে থাকা কলাবাগানের পয়েন্ট ছিল ৪।