রাজধানীর মোহাম্মদপুরে রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ‘কিশোর আলো’র বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান চলাকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলন করেছে সহপাঠীরা।
শনিবার দুপুরে তারা চার দফা দাবি জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী খানিকক্ষণ স্কুলের পেছনের সড়কে মৌন মিছিল করে স্কুলের ভেতরে ফিরে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:
১. ঘটনা চলাকালীন সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে হবে,
২. অনুষ্ঠানের মিস ম্যানেজমেন্টের দায় স্বীকার করে কিশোর আলো, ইভেন্ট অর্গানাইজার, আয়শা মেমোরিয়াল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত বক্তব্য দিতে হবে,
৩. ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ছাত্রদের হাতে পৌঁছাতে হবে,
৪. শুধু দুর্ঘটনা নয়, তাদের গাফিলতি, মিসম্যানেজমেন্ট এবং উদাসীনতা উল্লেখ করে পত্রিকায় উল্লেখ করে বিবৃতি দিতে হবে।
৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো আদায় না হলে পরবর্তীতে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গনেশ গোপাল বিশ্বাস চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘ঢাকা রেসিডেসিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনের সড়কে কয়েকজন শিক্ষার্থী খানিকক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে মৌন মিছিল করেন। তবে তারা দুপুরে পৌনে ১টার দিকে আবার ভেতরে চলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া নাইমুল আবরার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির দিবা শাখার শিক্ষার্থী ও আবাসিক ছাত্র ছিল। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়।
জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে কলেজ ক্যাম্পাসে কিশোর আলো আয়োজিত ‘লাভেলো কিআনন্দ’ অনুষ্ঠানে অংশ নেয় নাইমুল আবরার। অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চের পেছনে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সে গুরুতর আহত হয়। পরে আয়োজকরা তাকে উদ্ধার করে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। আবরারের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরেও অনুষ্ঠানটি চলতে থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
অন্যদিকে ফেসবুকে নাইমুল আবরারের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক। তিনি লিখেছেন: ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, কিশোর আলোর অনুষ্ঠান দেখতে এসে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজের ক্লাস নাইনের ছাত্র নাইমুল আবরার বিদ্যুতায়িত হয়। ওখানেই জরুরি মেডিক্যাল ক্যাম্পে তাকে নেওয়া হয়। দুজন এফসিপিএস ডাক্তার দেখেন। জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নিতে বলেন। হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
আনিসুল হক আরও লিখেছেন: ‘আমার জীবনে এর চেয়ে মর্মান্তিক খবর আমি আর পাই নাই। আমি এখন হাসপাতালে আছি। প্রিন্সিপাল স্যার আছেন। নাইমুল আবরারের বাবা-মা এবং আত্মীয়রা আছেন। আমি ও কিশোর আলো আজীবন আবরারের পরিবারের সঙ্গে থাকব। যদিও এই অপূরণীয় ক্ষতি কিছুতেই পূরণ হবে না। নাইমুল আবরারের জন্য দোয়া করছি।’