নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদাকে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।
এছাড়াও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, ব্রি. জে. (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী ও সাবেক জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম।
সোমবার রাতে কমিটির মুখপাত্র ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তাদের নিয়োগের কথা নিশ্চিত করেন।
রাতেই তাদের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এর আগে রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নামের চূড়ান্ত তালিকা জমা দেয় ইসি পুনর্গঠনে গঠিত সার্চ কমিটি। সার্চ কমিটির সদস্যরা সোমবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর চূড়ান্ত নামের তালিকা জমা দেন। এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় নামের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করতে সার্চ কমিটির সদস্যরা জাজেস লাউঞ্জে শেষবারের মত বৈঠকে বসেন।
সার্চ কমিটি সিইসি হিসেবে নুরুল হুদার পাশাপাশি সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমান মজুমদারের নামও প্রস্তাব করে। এছাড়ও কমিশনার হিসেবে আরো চার জনের নাম প্রস্তাব করে। তারা হলেন, পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জারিনা রহমান খান ও জানিপপ-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।
নূরুল হুদার বাড়ি পটুয়াখালীতে। ১৯৭৩-এর মুক্তিযোদ্ধা ব্যাচের এ কর্মকর্তা ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয় যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে দীর্ঘদিন ওএসডি থাকার পর ২০০৬ সালে সচিব হিসেবে অবসরে যান তিনি।
সার্চ কমিটির সুপারিশে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আরও যে চারটি নাম ছিল, তারা হলেন পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক জারিনা রহমান খান ও অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।
গত ২৫ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। কমিটির সদস্য হিসেবে ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মাসুদ আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি শিরিন আকতার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।
দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবমুক্ত এবং চেয়ার হারাবার ভয় না থাকা সাহসী মানুষদেরই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানায় সার্চ কমিটি।
সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ইসি নিয়োগে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে ইতোমধ্যে ২ দফা বৈঠক করে কমিটি। এছাড়াও নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসা ৩১টি দলের কাছে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে প্রস্তাবিত নাম চায় সার্চ কমিটি।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল সার্চ কমিটির কাছে নাম দেয়। তবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (রব) সার্চ কমিটিকে চিঠি দিয়ে নাম দেবে না বলে জানায়।
বাকি চারটি দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও গণফোরাম সার্চ কমিটির কাছে কোন নাম প্রস্তাব করেনি।