বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হলো ‘হ্যামলেট’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনী। উইলিয়াম শেক্সপিয়রের এই নাটকটি অনুবাদ করেন সৈয়দ শামসুল হক। নাটকটি নতুন করে মঞ্চে এনেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আর এই নাটকে অভিনয় করেছেন এ প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীরা।
নাটকের আগে ছিল আলোচনা। প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। আরও উপস্থিত ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, নাটকটির নির্দেশক আতাউর রহমান ও গবেষক মফিদুল হক।
আতাউর রহমান বলেন, ‘শেক্সপিয়রের লেখা ঠিক রেখে সৈয়দ শামসুল হক ঘটনাকে আমাদের প্রেক্ষাপটে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জীবনানন্দ দাশের কবিতা আর গান ব্যবহার করা হয়েছে। আছে আমাদের লোকসংগীত। যাতে করে শেক্সপিয়রের “হ্যামলেট” আমাদের “হ্যামলেট” হয়ে ওঠে। বাঙালি ও বাংলাদেশের “হ্যামলেট” হয়ে ওঠে।’
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘সৈয়দ শামসুল হক লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় “হ্যামলেট” নাটক অনুবাদ করেছেন। তিনি নাটকটি দেখে যেতে পারেননি। তার অনুবাদের ভাষা শক্তিশালী ও সাবলীল। তার নাটকের ভাষা, গল্পের বুনন, রূপকতা অনন্য। সৈয়দ শামসুল হকের রেখে যাওয়া কাজগুলো বারবার মঞ্চায়নের মধ্যমেই আমরা তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারব।’
লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ৪৫৩তম জন্ম ও ৪০১তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বিশ্বব্যাপী নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আমরা বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করছি। তারই অংশ হিসেবে মঞ্চে আনা হলো “হ্যামলেট”। সবগুলো দলের কর্মীদের থেকে অডিশনের মাধ্যমে নতুন প্যজন্মের সেরা অভিনয়শিল্পীদের বাছাই করে এই নাটকে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
আলোচনা শেষে মঞ্চস্থ হয় ‘হ্যামলেট’ নাটকটি। প্রথম প্রদর্শনীতে জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনের দর্শক গ্যালারি ছিল পূর্ণ। সাভার থেকে মিতু রহমান আসেন ‘হ্যামলেট’ দেখতে। নাটক দেখা শেষে তিনি বলেন, ‘কোন দিক দিয়ে এক ঘণ্টা ৪২ মিনিট পার হয়ে গেছে টেরই পাইনি। নাটকে বুঁদ হয়ে ছিলাম। সাভার থেকে আসছিলাম শুধু নাটকটা দেখার জন্য। আমি মনে করি আমার অর্থ ও শ্রম বিফলে যায়নি।’
‘হ্যামলেট’ নাটকে অভিনয় করেছেন মাসউদ সুমন, শামীম সাগর, সংগীতা চৌধুরী, আমিনুর রহমান মুকুল, শফিকুল ইসলাম, মো. সোহেল রানা, কান্তা জামানসহ অনেকে।