সম্প্রতি আইফোন ৮ এবং আইফোন ৮ প্লাসের সাথে আইফোন ১০ মডেলের একটি বিশেষ সংস্করণ বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল। অ্যাপল বেশ কিছু চমকপ্রদ ফিচার যোগ করেছে এই বিশেষ আইফোনে। এই ফিচারগুলোকে আইফোন ১০-এর বিশেষত্ব হিসেবেও প্রচার করছে অ্যাপল।
তবে মজার ব্যাপার হলো অ্যাপল যে ফিচারগুলোকে একেবারেই এক্সক্লুসিভ বলছে, সেসব ফিচারের অধিকাংশই এর আগেই দেখা গিয়েছে বিভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড ফোনে।
আইফোন ১০-এর এমনই কিছু ফিচার তুলে ধরা হলো যেগুলো আগেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ব্যবহার করা হয়েছে।
ফেসিয়াল রিকগনিশন
আইফোন দশের নিরাপত্তা ফিচার হিসেবে ‘ফেস আইডি’ নামে ফেসিয়াল রিকগনিশন ফিচার যুক্ত করেছে অ্যাপল। এর ফলে ফোন আনলক করতে প্রয়োজন হবে না ফিঙ্গারপ্রিন্ট। তবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই ফিচারটির ব্যবহার হয়েছিল বেশ আগে। স্যামসাং গ্যালাক্সি নেক্সাসে নিরাপত্তা ফিচার হিসেবে ছিল ফেসিয়াল রিকগনিশন। আর এরই ধারাবাহিকতায় স্যামসাং সম্প্রতি ব্যবহার করতে শুরু করেছে আইরিশ স্ক্যানার যা আগেরটি থেকে আরও বেশি নিরাপদ এবং কার্যকর।
বেজেলবিহীন ডিজাইন
আইফোন ১০-এর ডিজাইনের অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হলো কোনো বেজেল না থাকা। অনেকেই এই ডিজাইনের বেশ প্রশংসা করেছেন। কিন্তু এমন ডিজাইনের ধারণা অ্যাপল কোথায় পেল? অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকেই পেয়েছে বললে ভুল হবে না। কারণ ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি ব্রান্ডের বেজেলবিহীন স্মার্টফোন বাজারে এসেছে বা বাজারে আনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে প্রথম বেজেলবিহীন স্মার্টফোন নিয়ে কাজ করেছিল শার্প। ‘শার্প অ্যাকুওস’ মডেলের একটি স্মার্টফোনে দেখা গিয়েছিল বেজেলবিহীন ডিজাইন। গত বছর বাজারে আসা শাওমি মি মিক্সেও ছিল না বেজেল। পরবর্তীতে এলজি, স্যামসাং এবং আরও কিছু অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেজেলবিহীন স্মার্টফোন বাজারে আনে। এই তালিকায় আছে আলোচিত এসেনশিয়াল ফোনও।
কিউআই স্ট্যান্ডার্ড ওয়্যারলেস চার্জিং
ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য অ্যাপলকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। তবে ২০১১ সালেই স্মার্টফোনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল এলজি। ‘এলজি রেভোলিউশন’ মডেলের একটি স্মার্টফোনে ছিল ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তি। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক স্মার্টফোনেই কিউআই স্ট্যান্ডার্ড ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির দেখা মিলেছে।
কুইক চার্জিং প্রযুক্তি
এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব কম সময়ের মধ্যে ফোন সম্পূর্ণ চার্জ দিয়ে নেওয়া যায়। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এই ফিচারটি দেখা যাচ্ছে অনেকদিন থেকেই। ২০১৩ সালে প্রথম কোয়ালকম কুইক চার্জ প্রযুক্তি চালু করে। পরবর্তীতে ওয়ানপ্লাস এবং মটোরোলা নিজেদের কুইক চার্জিং প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। আর এই প্রযুক্তির ব্যবহার করতে আইফোনকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৭ পর্যন্ত। আইফোন ৮, ৮ প্লাস এবং ১০-এ থাকা কুইক চার্জিং ফিচারের মাধ্যমে ৩০ মিনিটেই ৫০ শতাংশ চার্জ দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল।
ওএলইডি ডিসপ্লে
এর আগ পর্যন্ত এলসিডি ডিসপ্লে ব্যবহার করলেও আইফোনে এবার ওএলইডি ডিসপ্লে ব্যবহার করেছে অ্যাপল। তবে আইফোন দশে ওএলইডি ডিসপ্লে থাকলেও আইফোন ৮ এবং ৮ প্লাসে কিন্তু এলসিডি ডিসপ্লেই থাকছে। অ্যাপলের আগে এ বছর ওএলইডি ডিসপ্লে সমৃদ্ধ মোবাইলের ঘোষণা দিয়েছে এলজি। কিন্তু তারও আগে ২০০৯ সালে স্যামসাং স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়েছিল ওএলইডি ডিসপ্লে।
ফোনে এইচডিআর কন্টেন্ট দেখা
আইফোন ১০-এ ওএলইডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা কারণে ফোনটিতে এইচডিআর মোডে ভিডিও দেখা যাবে। তবে এক্ষেত্রে অ্যাপলই প্রথম নয়। এই সুবিধা নিয়ে এ বছরের প্রথমদিকেই বাজারে এসেছে এলজি জি৬। পরবর্তীতে সনি এক্সপেরিয়া এক্সজেড প্রিমিয়াম, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৮ ও এস৮ প্লাস এবং এলজি ভি৩০ স্মার্টফোনেও দেখা গিয়েছে এই ফিচার।