দেশের বন্যা পরিস্থিতি দিনে দিনে অবনতি হচ্ছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতে বর্ষণ বেড়ে যাওয়া ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বন্যাপ্রবণ নদ-নদীগুলো। প্রধান প্রধান সব নদীর পানিই বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বন্যা প্রতিদিন বিস্তৃত হচ্ছে। শনিবার ৯টি জেলা হলেও রোববার প্লাবিত হয়েছে ১১টি জেলার নিম্নাঞ্চল।
পাউবো সূত্রমতে, সব প্রধান নদ-নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে, যা আগামী বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার নাগাদ পদ্মানদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। বর্তমানে বিপৎসীমার উপরে থাকলেও এসময় স্থিতিশীল থাকতে পারে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি উচ্চতা। তবে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। অপরদিকে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
যদিও বর্ষাকালে বন্যা একটি নিয়মিত বিষয়, তারপরেও করোনা মহামারীর এই সময়ে বন্যা নতুন করে সমস্যা তৈরি করতে যাচ্ছে বলে আমাদের শঙ্কা। জান-মাল, ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে ভিটেমাটি ও জীবিকা হারানোর বিপর্যয় অপেক্ষা করছে প্রান্তিক মানুষদের জীবনে।
কিছুদিন আগে বোরো ধানের ফলন ঘরে তুলেছে কৃষক। রাষ্ট্রীয় খাদ্যভান্ডারেও যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে বলে জানা গেছে। এছাড়া করোনার কারণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চলমান। সবমিলিয়ে বন্যার জন্য প্রস্তুতি একেবারে খারাপ নয় বলে আমাদের ধারণা। তারপরেও যেহেতু করোনার ছোবলে পুরো দেশ হিমশিম খাচ্ছে, সেজন্য অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। সরকার-জনগণসহ সংশ্লিষ্ট সব মহল আগেভাগে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ নিলে অবশ্যই বন্যা মোকাবেলা করা কঠিন কিছু হবে না।