ধানের দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। ঋণের বোঝা কমাতে কৃষক হালের গরু এমনকি চাষের জমি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এমন একজন কুষ্টিয়ার কৃষক মোর্শারফ হোসেন। গত মৌসুমে ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর ৯ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন এই কৃষক। তবে এবারও হতাশ তিনি। আক্ষেপ নিয়ে জানালেন, এবার পুরোটাই লোকসান তার।
মোর্শারফ হোসেনের মতো অনেক কৃষকেরই মাঠের ধান গলার ফাঁসে পরিণত হয়েছে। প্রতি বিঘায় ধান চাষ করতে যা খরচ হয়েছে তার প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হচ্ছে ধান। প্রতি বিঘায় ধান উৎপাদনে খরচ ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান, যার বাজার মূল্য ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় কৃষকের ক্ষতি তাই প্রায় ৪ হাজার টাকা।
সার, বীজ, কীটনাশক আর সেচের টাকা বাকি রেখে ধান চাষ করেছে বেশিরভাগ কৃষক। ধান বিক্রি করে বাড়তি এ ঋণ কিভাবে শোধ হবে, তাই এখন কৃষকের চিন্তা।
কৃষকরা জানান, ঋণ করে ধান চাষ করেছেন তারা। টাকা পাবে সারের দোকানদার। এসব ঋণ শোধ করতে বাড়ি-ঘর, জমি বন্ধক রাখা নয়তো বিক্রি করা ছাড়া তাদের আর কোনো উপায় নেই। ক্ষোভ আর অসহায়ত্ব ভরা কণ্ঠে তারা বলেন, রক্ত পানি করা ঘামের কোনো মূল্য নেই যেনো।
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যারা ধান চাষ করেছেন তারাও রয়েছেন উভয় সংকটে। কম দামে ধান বিক্রি করলে ব্যাংক ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে না। আবার দাম বাড়ার আশায় গোলায় ধান মজুদ করলে বেড়ে যাবে সুদের পরিমাণ। এ বাস্তবতায় ধান বা চাল আমদানি না করে উৎপাদন বাড়িয়ে কিভাবে কৃষককে লাভবান করা যায়, সেদিকে সরকারকে জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষকরা।
সরকার অবশ্য এরইমধ্যে চাল আমদানির ওপর ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে।