রাজধানীর বনানীতে ‘দ্য রেইট ট্রি’ হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে গণঅবস্থান কর্মসূচি থেকে দেশব্যাপী বিভাগীয় শহরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র রাজু ভাস্কর্যের সামনে যৌন নিপীড়ন বিরোধী নির্দলীয় ছাত্রজোটের ‘ধর্ষকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে গণঅবস্থান’ থেকে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা ছাত্রজোটের আহ্বায়ক শিবলী হাসান।
তিনি জানান, দেশের আটটি বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের নিয়ে যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৩ মে শনিবার থেকে ২৩মে পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লাগাতার কর্মসূচিপালন করবে যৌন নিপীড়নবিরোধী নির্দলীয় ছাত্রজোট। একই সময়ে ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলবে একই কর্মসূচি।
ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে কথা বলা আপন জুয়েলার্সের মালিককে কেন ব্যবসায়ী সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হচ্ছে না-এমন প্রশ্নও তোলেন শিবলী হাসান।
যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া একজন নারীর চরিত্র নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে যে ভয়াবহ নোংরামি শুরু করেছে একদল; তাদেরকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
ধর্ষকদের বিচারে সুনির্দিষ্ট চার দফা দাবিতে দেশব্যাপী যে কর্মসূচি চলবে সেগুলো হলো- বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কাটিয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, ধর্ষকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেয়া, ১৫৫ (৪) সংশোধন করে ধর্ষণের শিকার হওয়ার ব্যক্তির পরিবর্তে ধর্ষককে জেরা করা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নারী সেল গঠন করে নিপীড়িত নারীর জন্য সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সুবিধা নিশ্চিত করা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, যারা ধর্ষণের বিচার করবেন তারাই ধর্ষকদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন।
শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষিত হয়েছে কিন্তু কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেনি। কোনো ছাত্র সংগঠন রাস্তায় নামেনি। আমরা আমাদের লড়াই চালিয়ে যাবো আমরা কাউকে ছাড়ব না। আগামী ১৩ মে শনিবার সকাল ১১টায় বনানী থানা ঘেরাও করা হবে।
বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম বলেন, ধর্ষণের যে নিয়ম চলছে তার পরিবর্তন চাই আমরা। তবে যারা এখন নিয়ম করছে তারাই ধর্ষণের পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
‘‘নারীকে মানুষ হিসেবে দেখতে হবে। নারীকে সম্মান পরিবার ও সামাজিক ভাবে দিতে হবে।’’
অনুষ্ঠানে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য খান আসাদুজ্জামান মাসুম, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক জীবনানন্দ জয়ন্ত, আকরামুল হক, অরণ্য শাকিল ও নবেন্দু জয় প্রমুখ।