মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের মধ্যে কি ধর্ম বা ধর্মচর্চা থেকে সরে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে? মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আমেরিকায় মুসলমানদের মধ্যে পরিচালিত জরিপ বলছে, হ্যাঁ। এ অঞ্চলের মানুষ কম সংখ্যায় হলেও ধর্ম থেকে দূরে সরছেন। নারী অধিকার এবং অভিবাসীদের নিরাপত্তা ও যৌনাচার বিষয়েও এই জরিপে তারা মত দিয়েছেন।
বিবিসি নিউজের এরাবিক সার্ভিস ২৫ হাজারের বেশী মানুষের মধ্যে এ জরিপ চালিয়েছে। গত বছরের শেষ কয়েক মাস এবং এ বছরের শুরুর কয়েক মাসে ১০টি দেশ এবং ফিলিস্তিন অঞ্চলে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা যেসব বিষয়ে মত দিয়েছেন তার ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে ২০১৩ সালের দিক থেকে এসব অঞ্চলের মানুষের ধর্ম থেকে কিছুটা সরে যাবার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ২০১৩ সালে এ প্রবণতা ছিলো ৮% মানুষের মধ্যে। সেটা বেড়েছে ১৩% পর্যন্ত। ৩০ বছরের কম বয়সী আরবদের মধ্যে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশী। তবে ইয়েমেন এ প্রবণতা কমেছে। অর্থাৎ ইয়েমেনে ধর্মভীরুতা কমেনি।
মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশগুলোতে বেশীরভাগ মানুষ নারী সরকার বা রাষ্ট্র প্রধান হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আলজেরিয়া। আলজেরিয়ার ৫০% এর কম মানুষ নারীদের দেশ চালানোর পক্ষে আছেন।
কিন্তু নারীদের দেশ চালানোর অনুমতি দিলেও পরিবারের কর্তা হবে পুরুষ। এমনকি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান নারীও চান, পরিবারের যেকোন বিষয়ে পুরুষদেরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। কেবল মরক্কোর কিছু সংখ্যক মানুষ মনে করে নারীরাও পরিবারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন।
আরব দেশগুলোতে সমকামীতা একেবারেই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি এখন পর্যন্ত। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উদার বলে প্রচার পেলেও লেবাননের মানুষ সমকামীতাকে সমর্থতন করে না। দেশটির মাত্র ৬% শতাংশ মানুষ সমকামীতাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে।
এসব দেশের মানুষের কাছে সমকামীতার চেয়ে ‘অনার কিলিং’ বেশী গ্রহণযোগ্য। পরিবারের সম্মান নষ্ট করার দায়ে পরিবারের সদস্যরাই স্বজনকে হত্যা করাকেই অনার কিলিং বলা হয়। মুসলিম পরিবারগুলোতে মেয়ে সদস্যরাই এই অনার কিলিং এর শিকার হয় বেশী।