আসরজুড়েই সমালোচনার তোপ সামলাতে হয়েছে আম্পায়ারদের। হাস্যকর সব ভুলে তিক্ত সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন বিশ্বকাপ পরিচালনা করা আম্পায়াররা। ফাইনালেও যার বিন্দুমাত্র ব্যতিক্রম হয়নি। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময় একাধিক ভুল করেছেন দুই মাঠ আম্পায়ার- কুমার ধর্মসেনা ও মারাইস ইরাসমাস। কিউইদের বোলিংয়ের সময়ও পাল্টায়নি চিত্র। এসব দেখে রাগ সামলাতে পারছেন না ক্রিকেটপ্রেমীরা। টুইটারে চলছে রাগ ঝাড়ার প্রতিযোগিতা! একজন তো লিখেই দিয়েছেন, এরচেয়ে চতুষ্পদী প্রাণী আম্পায়ার হলে দুজনের চেয়ে অনেক ভালো করতো!
ভারতীয় এক সমর্থক তো সীমাই ছাড়িয়েছেন! টুইটারে কুকুরের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘ইরাসমাস ও ধর্মসেনার চেয়ে ১ হাজার গুণ ভালো আম্পায়ার!’ ছবিতে কুকুরের মাথায় ‘আম্পায়ার’ লেখা হ্যাট!
সমালোচনা এখানেই থামেনি। একেকটি টুইটে লর্ডসের ফাইনাল পরিচালনাকারী দুই আম্পায়ারকে ধুয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। আরেক ভারতীয় লিখেছেন, ‘উফফ্! ভুল করার কী দারুণ প্রতিযোগিতায় না নেমেছেন ধর্মসেনা ও ইরাসমাস!’
ভোহরা নামের একজন লিখেছেন, ‘ভারতের এস রবি, সাউথ আফ্রিকার মারাইস ইরাসমাস আর শ্রীলঙ্কার কুমার ধর্মসেনা, তিনজন ব্যাটিং, বোলিং কিংবা ফিল্ডিং না করেও যেকোনো দলকে ধসিয়ে দিতে পারেন!’
ক্রিকেটপ্রেমীদের খেপার অবশ্য কারণও আছে। রোববার ম্যাচের প্রথম থেকেই ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে এসেছেন আম্পায়াররা। বিশেষ করে ধর্মসেনা। সেমিফাইনালে জেসন রয়কে ভুল সিদ্ধান্তে আউট করেছিলেন। তাই ফাইনালে তার দায়িত্বে থাকা দেখে সমালোচনা হয়েছে বিস্তর। সেই সমালোচনা আরও উস্কে দিয়েছেন লঙ্কান আম্পায়ার নিজেই। তৃতীয় ওভারেই হেনরি নিকোলসের বিপক্ষে ক্রিস ওকসের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেন, পরে কিউই ব্যাটসম্যান রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান।
৩০ রান করা উইলিয়ামসনকে যখন মনে হল উইকেটে জমে গেছেন, তখনই কট বিহাইন্ডের আবেদন করেন লিয়াম প্লাঙ্কেট। তার করা ২৩তম ওভারের চতুর্থ বলটি কিউই অধিনায়কের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে জস বাটলারের হাতে জমা পড়লেও আম্পায়ার ধর্মসেনা আবেদনে সাড়া দেননি। পরে রিভিউ নিয়ে লঙ্কান আম্পায়ারকে ভুল প্রমাণ করেন ইংলিশ অধিনায়ক মরগান।
উইলিয়ামসন ফেরায় দায়িত্ব বর্তায় রস টেলরের কাঁধে। কিন্তু আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হন তিনিও। একপ্রান্তে ধর্মসেনার একাধিক ভুল সিদ্ধান্ত দেখতে দেখতে ইরাসমাসও যেন সে পথে হাঁটলেন! মার্ক উডের অফস্টাম্পের বাইরে পিচ হয়ে লেগস্টাম্পের উপর দিয়ে বের হয়ে যাওয়া বলেও এলবিডব্লিউর জন্য তর্জনী তুলে দেন সাউথ আফ্রিকান আম্পায়ার।
নিউজিল্যান্ডের পোড়া কপাল! বোলিংয়ের সময়ও তারা ভুল সিদ্ধান্তের শিকার। ট্রেন্ট বোল্টের করা ইনিংসের প্রথম বলেই আউট হতে পারতেন জেসন রয়। মিডল স্টাম্পে পিচ করা বল সরাসরি আঘাত হানত লেগস্টাম্পে। কিন্তু ব্যাটে লেগেছে মনে করে বোল্টের জোরাল আবেদনে সাড়া দিলেন না ইরাসমাস। রিভিউতে দেখা গেল আউট ছিলেন রয়! কিন্তু আম্পায়ার্স কলের কারণে বেঁচে যান ইংলিশ ওপেনার। সেমিতে যে ভুল করেছিলেন ধর্মসেনা এদিন রয়কে আউট না দিয়ে অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা সহকর্মীর দেনা যেন শোধ করে দিলেন ইরাসমাসই!