করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। ভারত থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ভ্যাকসিন আসার কথা থাকলেও তাদের অভ্যন্তরীণ সঙ্কটের কারণে আসছে না চুক্তি হওয়া ভ্যাকসিন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সরকার ও জনগণের মধ্যে।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আনার বিষয়ে চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাসে এসব ভ্যাকসিন আসার কথা ছিল। তবে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে দুই চালানে মোট ৭০ লাখ ভ্যাকসিন পেয়েছে বাংলাদেশ। এর বাইরে ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাওয়া গেছে ৩৩ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় গত মার্চে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করে ভারত। এই অবস্থায় বাংলাদেশের অন্তত ১৫ লাখ মানুষের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তা চলছে।
এতসংখ্যক মানুষের ভ্যাকসিনের এই অনিশ্চয়তা নিয়ে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগও চলছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছিলাম। ভারত কখনোই বলেনি যে ভ্যাকসিন দেবে না। তবে তারা দিতে পারছে না। আমি এর আগে চিঠিও দিয়েছি। আমি ওই দিন বলেছি যে আমরা ঝামেলায় পড়েছি। আমাদের ১৫ লাখ লোক দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য আটকে গেছে। ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলে প্রয়োজন হলে আমাদের উপহার হিসেবে দিন। কারণ, এর আগে আপনারা আমাদের উপহার দিয়েছিলেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, সরকার যেভাবেই হোক ভ্যাকসিন সংগ্রহে মনোযোগী হয়েছে। অপেক্ষা করার পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থাও খোঁজা দরকার বলে আমরা মনে করি।
ভিন্ন আরেকটি ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে দেবার বিষয়েও বিশ্বজুড়ে আলোচনা বিশ্লেষণ চলছে, সেদিকেও খেয়াল রাখা যেতে পারে। সবমিলিয়ে ওই ১৫ লাখ মানুষের পাশাপাশি বাদ থাকা পুরো দেশের মানুষের ভ্যাকসিনের বিষয়ে ভাবা ও পদক্ষেপ নেয়া একান্ত জরুরি।