ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে দ্বিতীয় বার ভর্তির সুযোগ চেয়ে করা রিট হাইকোর্টে খারিজ হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন গতবারের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, যারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ছেন তাদের বেশিরভাগই দ্বিতীয়বারের। অথচ প্রথমবার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বাদ পড়ারা এবার দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলেন। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে এমন অসম ব্যবস্থা বিলুপ্তির জন্যই দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে সরব কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের ওই সিদ্ধান্তের কথা ভর্তি পরীক্ষার আগে জানায়নি।
তবে কর্তৃপক্ষের দাবি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ না রাখার বিষয়টি এক বছর আগেই জানানো হয়েছিলো।
প্রথমবার পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পাননি এমন একজন শিক্ষার্থী বলেন, রিট খারিজ হওয়ায় তিনি হতাশ। এখন বাধ্য হয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অথবা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে তাকে। আরও অনেকই তা করেছেন বলে জানান তিনি। আরও জানান, তাদের সময় প্রথমবারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে খুব কম শিক্ষার্থীরাই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। আশা ছিলো ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেয়ার। দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকবে না এটা কর্তৃপক্ষের আগেই জানানো উচিৎ ছিলো। তাহলে আরও ভালোমতো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারতেন বলে আক্ষেপ করেন তিনি।
আদালতে রিট খারিজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, উচ্চ শিক্ষার অনুকূল পরিবেশের স্বার্থেই দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। এতে প্রকৃত মেধাবীদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। প্রথম ও দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে এবং দেশের উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ স্থানে আসন শূন্যতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০০৯ সাল থেকেই টানা দু’বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেতেন। তবে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করেন। চলতি বছর থেকে এ পদ্ধতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিলে তা চ্যালেঞ্জ করে ১২ মার্চ দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক ২৬ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবক হাইকোর্টে রিট করেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটের শুনানির পরে এ রায় হয়।