‘বাংলাদেশে ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ মানুষ ক্লিন এনার্জি থেকে জ্বালানি পাবে। আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি যে, ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ মানুষ ক্লিন এনার্জি থেকে জ্বালানি পাবে। এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
দশম বার্লিন এনার্জি ট্রানজিশন ডায়ালগে স্টেক হোল্ডার সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের উত্তরে কথাগুলো বলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) এই ইন্টারভিউটি সম্প্রচার করা হয় বার্লিন এনার্জি ট্রানজিশন ডায়ালগের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে।
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার এবং বিকাশ নিয়ে নসরুল হামিদের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। ছোট এই দেশটি জনসংখ্যা ১৬ কোটি। এরমধ্যে ৬০ শতাংশই জলাভূমি। ৭০০টি নদী আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের দেশে রয়েছে। প্রতিবছরই বন্যা হয়, ঘূর্ণিঝড় হয়। আমাদের দেশে কৃষকরা অসংখ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। চাষাবাদ সেখানে কঠিন। তারা ডিজেল পাম্প ব্যবহার করে। জ্বালানির দামও বাড়ছে। বৃষ্টিপাতের তারতম্যও রয়েছে। তবে জ্বালানি মন্ত্রণালয় যা করছে তা হলো-আমাদের একটি সংগঠন আছে যার নাম স্রেডা (টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ)। আমরা কৃষি মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ১২ লাখ ডিজেল পাম্পকে সোলার পাম্পে রূপান্তর করার কাজ করছি।
তবে এই কাজে যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মূল চ্যালেঞ্জটা হচ্ছে আমরা কত দ্রুত এটা করতে পারব। কৃষকরাও প্রচলিত রীতির বাইরে কাজ করতে আগ্রহী নয়। প্রযুক্তি পরিচালনা করাও একটা বড় ব্যাপার। কারণ কৃষকরা পর্যাপ্ত শিক্ষিত নয় বিষয়গুলো পরিচালনার জন্য।’
এই চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ কিভাবে উতরাবে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সোলার রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করছি। ২০২৩ সাল থেকে ২০৩১ সালের মধ্যে আমরা ৪৫ হাজার ডিজেল পাম্পকে সোলার পাম্পে রূপান্তর করার কাজ করছি। এতে আমরা ৩ লাখ টন কার্বন ডাই অক্সাইড প্রশমন করতে পারব। তবে আমাদের ১২ লাখ ডিজেল পাম্প আছে এটা মাথায় রাখতে হবে। বড় চ্যালেঞ্জ এটা। অবশ্য অনেক আর্থিক সংস্থাই আমাদের সঙ্গে কাজ করছে যেমন-এডিবি, জিআইএস। এটা কঠিন হবে জেনেও আমরা শুরু করেছি। আমরা এরইমধ্যে ২ হাজার পাম্প নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এ ছাড়াও কৃষকদের বুঝাতে হবে যে এটার ভালো দিকগুলো কী কী।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এর জন্য প্রণোদনা দিচ্ছি। এ জন্য আমরা ভর্তুকিও দিচ্ছি। যার ফলে মানুষ এই কার্যক্রমে আগ্রহ হচ্ছে। এছাড়া আমরা একটা নীতি গ্রহণ করেছি, যেখানে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ তৈরি করে সোলার পাম্প বসানো হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, আর্থিক যোগান ও অভিজ্ঞতার বিনিময় টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। জার্মানিসহ উন্নত দেশসমূহকে প্রযুক্তি হস্তান্তরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিৎ।
এ সময় বার্লিন এনার্জি ট্রানজিশন ডায়ালগ-২০২৪-এ অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।