চোখ ছলছল। মুখে ক্লান্তির ছাপ। শনিবার রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার দেখা মিলল, তিনি যেন শোকের চাদরে মোড়া। এক পলক দেখেই বোঝা গেল এশিয়া কাপের ফাইনালে অমন হার এখনো ভুলতে পারেননি।
মাশরাফী ভুলতে পারেননি আরও অনেক কিছু। তার মধ্যে লিটনের আউট একটি। কিন্তু সেটি নিয়ে কথা বলে ঝামেলায় পড়তে চাইলেন না। শুধু বললেন, ‘দেখুন এমনিতে স্লো ওভার-রেটের কারণে ৪০ শতাংশ জরিমানা খেয়েছি। আর খাওয়ার ইচ্ছা নেই।’
বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে শুরু করার পর আফগানিস্তান, পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে। সেখানে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়াইয়ে শেষ বলে হারতে হয় মাশরাফীদের।
এমন একটি টুর্নামেন্ট শেষ করে বাংলাদেশ ঢাকায় পা রাখে শনিবার রাত ১১টার কিছু পরে। বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফী এই টুর্নামেন্ট থেকে কিছু প্রাপ্তির কথা বলেছেন, ‘লিটন, মিঠুন পারফর্ম করেছে। এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি ওরা বুঝতে পেরেছে ওদের ভালো খেলার যোগ্যতা আছে।’
এক সময় বললেন চোখে-মুখে অমন হতাশা লেগে থাকার পেছনের কথা, ‘শেষ আটদিনে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছি। এরপর দুই ঘণ্টা করে ভ্রমণক্লান্তি। শরীরের ওপর দিয়ে ধকল গেছে। জিততে চেয়েছিলাম। সেটা পারিনি। অবশ্যই হতাশ।’
মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। এই টুর্নামেন্টের শেষ কয়েক ম্যাচে আগের মতো ছন্দে ফিরতে দেখা গেছে তাকে। ফিজের ফিরে আসাকেও অধিনায়ক মাশরাফী প্রাপ্তির খাতায় যোগ করতে চাইলেন, ‘মোস্তাফিজ আগের মতো ফিরে আসছে। এটি খুব ইতিবাচক। এই টুর্নামেন্ট থেকে শিক্ষা নিতে পারলে ভবিষ্যতে ভালো কিছু হবে।’
টুর্নামেন্টে ফাইনালের আগ পর্যন্ত উদ্বোধনী জুটি মোটেও ভালো খেলেনি। মিডলঅর্ডারে ভর করে ফাইনাল পর্যন্ত আসে বাংলাদেশ। অবাক করার বিষয় হলো ফাইনালে বাংলাদেশ সেই ওপেনিং থেকে শতাধিক রানের জুটি পায়। কিন্তু মিডলঅর্ডার ভালো করতে না পারায় স্কোর বড় হয়নি। মাশরাফী মনে করেন মিডলঅর্ডারের ব্যাটসম্যানরা নার্ভাস ফিল করছিলেন, ‘টপ অর্ডার দেখে মনে হয়নি যে ওরা চাপে আছে। কিন্তু মিডলঅর্ডার দেখে মনে হয়েছে তারা নার্ভাস ফিল করছে। চাপের ভেতর শট খেলছে।’
মাশরাফী মনে করেন এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে একটা টুর্নামেন্ট জেতা খুব জরুরি, ‘একটা টুর্নামেন্ট জিততে পারলে ভবিষ্যতে আরও টুর্নামেন্ট জেতা সম্ভব।’