চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

দেশের বাইরে অপেক্ষায় নির্মাতা, চোখ দেশের প্রেক্ষাগৃহে

বহু দেশ ঘুরে এসেছে ছবিটি। বিশ্বের বিভিন্ন ছোট বড় ফেস্টিভালগুলোতে হয়েছে ছবির প্রদর্শনী। কোথাও কোথাও পেয়েছে শ্রেষ্ঠত্বের সম্মান। কিন্তু বাংলার গল্পে, রসে, গন্ধে নির্মিত বাংলা ভাষার ছবিটি দেখেনি বাংলাদেশের মানুষই! এবার এলো সেই সুযোগ।

বলছিলাম দেশে-বিদেশে সমানভাবে আলোচিত তরুণ নির্মাতা বিজন ইমতিয়াজের পরিচালনায় ছবি ‘মাটির প্রজার দেশে’র কথা। শুক্রবার (২৩ মার্চ) দেশের তিনটি প্রেক্ষাগৃহে চলছে ছবিটি। রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার এবং রাজশাহীর উপহার সিনেমায় চলছে ছবিটি। এরইমধ্যে সোশাল মাধ্যমে ছবিটির প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন ছবির প্রযোজক আরিফুর রহমানসহ পুরো টিম। চলচ্চিত্রের প্রতি ভালোবাসা থেকে এমন প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা গেছে দেশের নামিদামি নির্মাতা থেকে একেবারে সাধারণ মানুষও। কিন্তু দেশের বাইরে থাকায় টিমের সঙ্গে স্বশরীরে প্রচার প্রচারণায় না থাকতে পারলেও প্রতি মুহূর্তে ‘মাটির প্রজার দেশে’ নিয়ে খোঁজ রাখছেন নির্মাতা বিজন। বর্তমানে তিনি বাস করছেন আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসে।

শুক্রবার দুপুর সোয়া বারোটা। তরুণ নির্মাতা বিজন ইমতিয়াজের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘মাটির প্রজার দেশে’ নিয়ে প্রতিক্রিয়া কেমন পাচ্ছেন? নির্মাতার সোজাসাপ্টা উত্তর: সকালের শো’টা এখনো কোথাও শেষ হয়নি। আপাতত অপেক্ষায় আছি।

বড় পর্দায় ছবিটি আগেও দেখানো হয়েছে। কিন্তু এবারই প্রথম দেশের মানুষ দেখছে আপনার ‘মাটির প্রজার দেশে’। এই মুহূর্তটাকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করবেন?-প্রশ্নে নির্মাতার উত্তর: সত্যি কথা বলতে একটু মন খারাপ। ৫.১ সাউন্ড সিস্টেমের পেছনে পিছনের স্পিকারটা বন্ধ ছিল প্রথম ২০ মিনিট, এটা মানতে একটু কষ্ট হচ্ছে। আমি এই ব্যাপারে খুব খুত খুতে। প্রথম ২০ মিনিট দর্শক পূর্ণ অভিজ্ঞতা পায়নি। জুয়েল ভাই( মাটির প্রজার দেশের সম্পাদক) লক্ষ্য করে ব্যাপারটা। তারপর প্রজেকশনিস্টকে জানানোর পর উনারা ঠিক করেছেন।

নিজের ছবি মুক্তি উপলক্ষ্যেওতো দেশে আসতে পারতেন?-কথা শেষ না হতেই বিজন ইমতিয়াজ বলে উঠেন, সত্যি কথা বলতে আমাদের বাজেট নাই। স্বপ্ন পূরণ করতে হলে বাস্তবাদী হইতে হয়, শুধু স্বপ্ন দেখে গেলেই চলে না। ইচ্ছে থাকলেও আমি আসতে পারছি না বা পারিনি এটাই হলো বাস্তবতা। আসলে আমরা সিদ্ধান্ত নেই লং টার্ম ব্যাপারের জন্য।

দেশের প্রেক্ষাগৃহে ‘মাটির প্রজার দেশে’ নিয়ে নির্মাতা আরো বলেন, এই ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিয়ে আমরা প্রচুর টাকা আয় করে ফেলবো এমনটা আশা করছি না। কিন্তু আমরা আসলে মার্কেটটা তৈরি করতে চাচ্ছি। এ ধরণের সিনেমা নিয়ে বাংলাদেশে মার্চ করতে চাইছি। সিনেমা আমাদের পেশনের জায়গা। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির মাধ্যমে দর্শকদের সাথে যতোটা কানেক্ট করতে পারবো ততোটাই ভালো। অন্তত আমাদের আগামি সিনেমার জন্য বিষয়টা সহজ হবে বলেই আমাদের মনে হয়। আর আমরা চেষ্টা করবো, যেভাবেই যে ধরণের ছবিই বানাই বাংলাদেশের মানুষকে ছবিটা দেখাতে চাই। কারণ আমরা বাংলাদেশের গল্প নিয়ে সিনেমাটা করছি। করতে চাই।

প্রথম সিনেমা ‘মাটির প্রজার দেশে’ যদি দেশের দর্শক না গ্রহণ করেন সেই ক্ষেত্রে সিনেমা নির্মাণ এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির বিষয়ে কী ভাববেন?-প্রশ্নে বিজন বলেন: রিজেকশান খুব ইম্পোর্টেন্ট। আমরা যে কতো কতো ফেস্টিভালে গিয়েছি ছবিটা নিয়ে, সব ফেস্টিভালেতো আর ভালো কিছু করে উঠা সম্ভব হয়নি। প্রচুর রিজেকশান পেয়েছি। তাতেও আমাদের ভালো হয়েছে। অন্তত যেসব ফেস্টিভালে রিজেকশান পেয়েছি, তারাতো অন্তত আমার সিনেমাটার নাম দেখেছে। অন্তত রিজেকশানের মধ্য দিয়ে তাদের সাথে কিন্তু আমার এক ধরনের কানেশান তৈরি হয়েছে। সিনেমা আমার কাছে এক্সপ্রেসন। আমি জীবনে একটা সিনেমা বানানোর জন্য সিনেমা বানাতে আসিনি। আমি সারা জীবন সিনেমা বানাবো। আমরা যে ধরনের সিনেমা বানাই, আমরা আমাদের মতো করে এভাবেই কাজ করে যাবো। দর্শক যা পছন্দ করে এরকম সিনেমা হয়তো বানাবো না, কিন্তু দর্শক যাতে আমাদের সিনেমার সাথে কানেক্ট করতে পারেন তেমন কিছুই করবো। তাতে রিজেকশান পাইলেও আমাদের কিছু করার নাই। আমরা আমাদের মতো সিনেমা বানিয়েই যাবো।

সাধারণ দর্শকের মতো ছবির অভিনেতারাও মুক্তির দিনে প্রথমবার দেখতে পারছে ‘মাটির প্রজার দেশে’। এমনটাও জানালেন নির্মাতা। বললেন: এখন পোলাপান প্রচুর খাটতেছে। আমাদের পুরো টিমটা। তাদের সাথে একসঙ্গে বসে সিনেমাটা দেখা মিস করছি। কারণ আমার ছবির অভিনেতারাও এখনো ছবিটি দেখে নাই। আমি দেখাইনি ইচ্ছে করে। যতোটুকু দেখার দরকার ততটুকু দেখিয়েছি তাদের। আমি মনে করি, সিনেমাটা বড় পর্দায় ঠিক ঠাক সাউন্ডে দেখা উচিত। এমনকি আমি সেটে মনিটরেও কাউকে ফুটেজ দেখাইনি। তারা অসংখ্যবার রিকুয়েস্ট করছে কিন্তু দেখাইনি। আমি চাই ফুল এনভায়রনমেন্টে সবাই সিনেমাটা দেখুক।

মাটির প্রজার দেশের একাংশ…

মাটির প্রজার দেশে ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, কচি খন্দকার, শিউলি আক্তার, চিন্ময়ী গুপ্তা, রমিজ রাজু, আবদুল্লাহ রানা, মনির আহমেদ শাকিল, রিকিতা নন্দিনী শিমু প্রমুখ। এতে প্রধান শিশুশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহমুদুর অনিন্দ্য। ছবির জন্য একটি গান গেয়েছেন ভারতের সংগীতশিল্পী সাত্যকি ব্যানার্জি।