‘ফুফু ডাক্তার, তাই আমারও ছোট থেকে ইচ্ছা ছিলো ডাক্তার হবার। কিন্তু সে আশা যখন পূরণ হয়নি তখন ভেঙ্গে পড়িনি। নিজের ইচ্ছায় ফার্মাসিস্ট হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলাম সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে।’
কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে নারী নেতৃত্বে অগ্রদূতের কাতারে যুক্ত হওয়া নতুন একটি নাম সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইফফাত ফারাহ মৌসুমি। সেই সাথে দেশ পেলো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ।
জন্ম ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলায়। কিন্তু ছোট থেকে বেড়ে উঠেছেন রাজধানীর উপকন্ঠ সাভারে। বাবা ব্যবসায়ী আর মা শিক্ষক, তিন বোনের মধ্যে তিনিই বড়।
২০০৮ সালে সাভারের রেডিও কলোনি মডেল স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১০ সালে সাভার মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে ভর্তি হন।
ভর্তি হবার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ-গান, অভিনয় এবং খেলার মাঠে মেলে ধরেছেন নিজের প্রতিভাকে। এসব সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় সেরা ও রানারআপ হয়ে নিজের ঝুলিতে পুরেছেন নানা পুরস্কারও।
মিষ্টি চেহারার এই মেয়েটিকে ছোট-বড় সবাই একনামে চেনে ক্যাম্পাসে। তাকে ছাড়া যেনো ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবের পড়াশোনা আড্ডা কোনো কিছুই সম্পূর্ণ হয় না। আর তার এই সবকিছুর পেছনে যাদের উৎসাহ বা অবদান তা সম্পূর্ণ বন্ধু-বান্ধব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং পরিবারের।
সম্প্রতি গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় কমিটিতে সর্বাধিক ভোট পেয়ে দেশের প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ হওয়ায় উচ্ছ্বাসভরা কণ্ঠে মৌসুমি বলেন, ‘মুক্তবুদ্ধির চর্চা কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আক্ষরিক অর্থে বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠার অন্যতম নিয়ামক হল গণতন্ত্র চর্চা। আর এ জন্যই দরকার নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধি এবং দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
গল্পের বইও পছন্দ মৌসুমির। সময় পেলে এখনো রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ’ পড়েন। মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখাও পছন্দ তার।
শুধু নিজের জন্যই নয়, ভাবেন সাধারণ মানুষের কথাও।
মৌসুমি জানান, ‘আমাদের দেশে অনেক প্রতিষ্ঠান সাধারণ মানুষকে ভুল ও ভেজাল ওষুধ খাওয়ায়। স্বেচ্ছাসেবী কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভেজাল ওষুধ শনাক্তকরণ নিয়েও কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।’