শত শত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া অভিনেতা মিশা সওদাগরের ধারণা, ‘দেশীয় চলচ্চিত্র আর ঘুরে দাঁড়াবে না, প্রশ্নই আসে না।’ এই কথাটি ইংরেজিতে তিনি বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রি উডেন্ট টার্ন অ্যারাউন্ড এনিমোর।’
গত শনিবার সন্ধ্যায় এফডিসিতে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের রূপালি পর্দার এই ‘খল-অভিনেতা’।
কথার যুক্তি দিতে গিয়ে ‘এসকে ফিল্মস’ প্রযোজিত শাকিব খানের ২টি সিনেমার উদাহরণ টেনে মিশা বলেন, ”এই বয়সে এসে আমার আর বানিয়ে কথা বলার কিছু নেই। গত ২ বছরে শাকিবের ‘বীর’, ‘পাসওয়ার্ড’ ছাড়া কোনো ছবি ব্যবসা সফল তো দূরের কথা, হাউজফুলও হয়নি। ২-৩ বছরে মাত্র ২টি ছবি দিয়ে কোনো ইন্ডাস্ট্রি বছরের পর বছর সার্ভাইভ করতে পারে না।”
‘আমার সৌভাগ্য যে দুটি ছবিতেই ছিলাম। সর্বশেষ ‘বীর’ থেকে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি। এজন্য আমি গর্ববোধ করি।’
চলচ্চিত্রের সোনালি অতীতের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন মিশা। বললেন, ‘আগে আমরা মর্নিং টু নাইট শো পর্যন্ত হাউজফুল দিয়েছি। এমনও হয়েছে আমাদের ছবি ২৯ শো পর্যন্ত হাউজফুল গেছে। গত দুই বছরে ‘বীর’ ‘পাসওয়ার্ড’ ছাড়া কোনো ছবিতে এই চিত্র দেখা যায়নি। কাজেই ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে, এটা মানুষ এমনি বলে। আসলে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো পথ দেখছি না।’
ইন্ডাস্ট্রি ঘুড়ে দাঁড়ানোর আগে চলচ্চিত্রের মানুষদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে উল্লেখ করে মিশা সওদাগর বলেন, আমাদের পাশাপাশি একইসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি সমন্বয় দরকার। হাতে প্রযুক্তির কারণে দর্শক এখন আকাশ সংস্কৃতিতে ঝুঁকেছে। আমার চেয়ে আমার সন্তান বেশি আনুধিক। সে বিশ্বকে দেখছে হাতের মুঠোয়। এই দর্শকদের আগের ফর্মুলায় ধরে রাখা যাবে না।
‘ফিল্মে গবেষণা’ নেই বলে এমন দুর্গতি মনে করেন মিশা সওদাগর। তার স্পষ্ট কথা, যা বানাবো মানুষ তাই দেখবে ভাবলে ভুল। এই ভেবে বানানো বলে ছবি চলছে না। ভেরি অনেস্ট, এসব ছবি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। আসলে ওই ছবি কোনোটাই চলছে না। সিনেপ্লেক্সে নিজের দর্শক নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অনেকেই দেখাচ্ছে; পুরস্কার পাচ্ছে ভালো কথা। কিন্তু আসলে ওইসব ছবি কোনোটাই ‘ব্যবসা সফল হচ্ছে না’।
এ প্রসঙ্গে মিশা আরও বলেন, সব ছবির আসলে খোঁজ খবর রাখি। ভালো ছবি করতে হলে গবেষণা করতে হবে। সঠিক গল্প, গান, ফাইট, পরিচালক, লোকেশন, শিল্পী দিতে হবে। গত কয়েক বছরে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো কয়টা ছবি হয়েছে যেগুলো চলে নাই? ‘মিশন এক্সট্রিম’র গল্প ভালো ছিল। কিন্তু দর্শক যদি না দেখে ওই ছবির কোনো ভ্যালু নেই। প্রযোজকের লগ্নিকৃত টাকা ফেরত আসতে হবে। নইলে ‘আয়নাবাজি’র প্রযোজক আর ছবি বানাচ্ছেন না কেন?
একই কথার প্রসঙ্গে মিশা সওদাগর বলেন, ‘শান’ নামে একটি ছবি আসছে; ওটা অসম্ভব ভালো ছবি। সবকিছু প্রপারভাবে দেয়া হয়েছে। আমি অভিনয় করেছি বলে বলছি না, ছবিটা আসলেই ভালো হয়েছে। আমার ধারণা, ছবিটা দর্শকদের দেখা উচিত।