নর্থ কোরিয়ান ক্লাব এপ্রিল-২৫’র বিপক্ষে বুধবার ৪-৩ গোলে জিতেছে আবাহনী। চার গোলের দুটি এসেছে দুই বাংলাদেশি সোহেল রানা ও নাবীব নেওয়াজ জীবনের পা থেকে। কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে দেশিদের এ ফর্মই হাসি ফোটাচ্ছে লাল-সবুজদের কোচ জেমি ডের। ইংলিশ কোচের আশা ১০ সেপ্টেম্বর তার পকেটে অন্তত একটা পয়েন্ট হলেও পুরে দেবেন শিষ্যরা।
নিরপেক্ষ ভেন্যু হিসেবে তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেকে বেছে নিয়েছে আফগানিস্তান ফুটবল দল। সেখানে বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে রণপ্রস্তুতি সারার জন্য দুই সপ্তাহের একটু বেশি সময় পাচ্ছেন জেমি। শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়া ফুটবলারদের। ২৬ সদস্যের সবাই অবশ্য শুরু থেকেই ক্যাম্পে আসছেন না। এএফসি কাপের ইন্টার জোন সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আবাহনীর ৭ খেলোয়াড় থাকবেন বাইরে। তারা ক্যাম্পে যোগ দেবেন ২৮ আগস্টের পর। ক্যাম্প শুরু হবে শনিবার থেকে।
তাতে অবশ্য কোনো আপত্তি নেই জেমির। বরং আবাহনীর খেলা দেখে বেশ তৃপ্তই মনে হল তাকে। নর্থ কোরিয়ার একটি শক্তিশালী ক্লাবের বিপক্ষে দেশিয় ফরোয়ার্ডদের গোল জাতীয় দলের উপকার করবে বলেই মত তার।
‘সোহেলের গোলটা দারুণ ছিল। এটা ওকে আত্মবিশ্বাস দেবে। জীবনও গোল পেয়েছে। এই গোলগুলো শুধু ক্লাবকে নয়, জাতীয় দলকেও সাহায্য করবে। তাদের গোল দেখে নিজেও আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। দেখে মনে হচ্ছে, এশিয়ার যেকোনো দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা বাংলাদেশের আছে। দারুণ ফর্ম নিয়েই আবাহনীর খেলোয়াড়রা দলে আসছে।’
আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা মান বাঁচালেও বুধবার চোখে পড়ার মতো ভুল করেছেন আবাহনী গোলরক্ষক শহীদুল আলম সোহেল। তার দুই ভুলে দুই গোল হজম করেছে আকাশী-নীলরা। বিশেষ করে বাতাসে ভেসে থাকা বল ঠেকানোয় তার দুর্বলতার বিষয়টি অতীতেও ভুগিয়েছে জাতীয় দলকে।
অতীতের মতো এবারও এই গোলরক্ষক পাশে পাচ্ছেন জাতীয় দল কোচকে। রীতিমত ঢাল হয়েই সোহেলের সব সমালোচনা ঠেকিয়ে দিলেন জেমি ডে, ‘তার উচ্চতা ভালো। ভুল করা স্বাভাবিকই। কিন্তু মৌসুমজুড়েই সে ভালো ফর্মে ছিল। আর সব গোলরক্ষকই ভুল করে। তবে গতরাতে (বুধবার) তৃতীয় গোলটির সময় তার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। তাই বলে তাকে দলের বাইরে রাখা যাবে না। শুধু সে-ই নয়, আবাহনীর প্রায় সব খেলোয়াড়ই গতরাতে কমবেশি ভুল করেছে। এটা খেলারই অংশ।’
প্রাথমিক দল শুরুতে ২৫ জনের থাকলেও পরে যোগ হয়েছেন বাড়তি আরেকজন গোলরক্ষক। দলে এসেছেন আরামবাগের মাজহারুল ইসলাম। স্কোয়াডে তিনজন গোলরক্ষক থাকার পরও বাড়তি আরেকজন যোগ হওয়াতে কোনো সমস্যা দেখছেন না জেমি।
‘মূলত তিনজনকেই নিয়ে যাওয়া হবে সফরে। তবে মাজহারুলকে দলে রাখা হচ্ছে যেন সে জাতীয় দলের আবহাওয়ায় মানিয়ে নিতে পারে। গোলরক্ষকদের একজন চোটে পড়তেই পারে। তখন কিন্তু তিনজন নিয়েই খেলতে হবে। দলে বাড়তি আরেকজন নিয়ে কাজ করতে যাওয়াটা সমস্যা হওয়ার কথা না।’
বাছাইপর্বের অন্যসব দলের চেয়ে অনেকটা দেরিতেই প্রস্তুতি শুরু করছে বাংলাদেশ। খেলোয়াড়রা খেলার মধ্যে থাকায় অবশ্য দুই সপ্তাহই যথেষ্ট মনে করছেন লাল-সবুজ কোচ, ‘দুই সপ্তাহর প্রস্তুতির পর আমরা সামনেই তাকাতে চাই। প্রথম সপ্তাহে খেলোয়াড়দের প্রাত্যহিক সূচির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কীভাবে খেলতে হবে আমরা সেটা ঠিক করব।’
‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলাটা কঠিন হবে। আমরা দেশের বাইরে খেলবো। খেলবো টার্ফে। তবে এটা কোনো অজুহাত হতে পারে না। আশা করছি একটা ভালো ফল নিয়েই দেশে ফিরতে পারব।’