বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন: ভয়বাহ ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। কিন্তু এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের কোনো প্রস্তুতিই দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন: জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল প্রধানমন্ত্রীর হাতে, কিন্তু উনি কোনো ধরনের মিটিং না করেই বিদেশ চলে গেলেন। কোনো আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা নেই। উপকূলীয় জেলা পর্যায়ে জরুরি সভা নেই। তিন বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, কোস্টগার্ড, আনসার এদের নিয়ে কোন সভা করা হয়নি। উদ্ধার কাজে কোনো প্রস্তুতিই গ্রহণ করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন: উদ্ধারকর্মী, উদ্ধারযান, খাবার,পানি এসবের কোন প্রস্তুতিই দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৪ বার দেশ পরিচালনা করেছেন। সেসময় দেশে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এসেছে। কিন্তু তিনি কখনোই বিপদ দেখে পালিয়ে যাননি। পুরো শাসন পিরিয়ডে যে কোনো ধরনের জাতীয় দুর্যোগ-দুর্বিপাকে খালেদা জিয়া তৎপর ছিলেন। সফলতার সঙ্গে সব মোকাবেলা করেছেন। মিটিংয়ের পর মিটিং, নির্দেশনা, এমনকি রাতভর জেগে থেকেও উদ্ধারকর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের মনিটরিং করতেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন: দেশ শাসনে কর্তৃত্ববাদী কর্তৃপক্ষ থাকলে জনকল্যাণমূলক কোনো কাজ হয় না। জনগণের প্রতি ভোটারবিহীন সরকারের কোন দায়-দায়িত্ব থাকে না। দেশের মানুষ বাঁচলো কি মরলো তাতে স্বৈরাচারী সরকারের তাতে কিছু যায় আসে না। দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাই দুর্যোগ-দূর্বিপাকে সরকারের অমনযোগিতার কারণে মানুষ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে পড়ে। জীবন-সহায়-সম্বল নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়। কারণ এধরনের সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে জনগণের অংশগ্রহণ থাকে না। অবৈধ ক্ষমতাসীনরা প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হওয়ার সম্ভাবনাকে প্রতিহত করতে আগাম কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করে না। এই সরকারও করেনি।
রিজভী বলেন: এক প্রলয়ঙ্ককারী দুর্যোগের আলামত সুস্পষ্ট হলেও সরকার তা মোকাবেলা করতে কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। তাই এই মুহূর্তে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে। সমগ্র উপকূল অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমান, তেল রিজার্ভার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র-এসব নিরাপদ করার এখনই সময়।
এসময় তিনি ‘ফণী’ মোকাবিলায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন: সকলেই উদ্ধারকর্মীর মতো প্রস্তুত থাকতে হবে। উপকূলীয় বাসিন্দাদের পাশে থাকতে হবে। অসহায় এসব মানুষকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি। তারা নিজেদের নিরাপত্তাসহ অন্যদের নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট থাকবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।