শারদীয় দুর্গাপূজায় কোনো ধরণের শঙ্কা নেই জানিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের(ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন: সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি জানান: বিজয় দশমী শুক্রবার পড়ায় জুমার নামাজের জন্য দুপুর ১২ টা থেকে ২টা পযর্ন্ত পূজার বাদ্যযন্ত্র বন্ধ থাকবে।
রোববার দুপুরে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন: ঢাকার প্রত্যেকটি বড় মন্দিরে স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ডগস্কোয়াড এর মাধ্যমে সুইপিং করা হবে। র্যাব সদস্যরাও কাজ করবেন। যেকোন ধরণের ছিনতাই ও ইভটিজিংয়ের ঘটনা এড়াতে গোয়েন্দা পুলিশ ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। অনুষ্ঠানস্থলে হকার বসতে ও প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন: প্রত্যেকটি মন্দির সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষনিক মনিটর করা হবে,আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে দর্শকদের প্রবেশ করতে হবে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
পুরো পূজা উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে, যেখান থেকে সার্বক্ষনিক ডিউটিতে থেকে পূজা কমিটির নের্তৃবৃন্দের সাথে সমন্বয় করে নিরাপত্তা বিধান করা হবে।
দশমীর দিনে শোভাযাত্রার কথা উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন: শোভাযাত্রার রুট হবে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বেরিয়ে পলাশীর মোড়, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, সরকারি কর্মচারি হাসপাতাল, গোলাপ শাহ মাজার হয়ে, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার হয়ে, সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে, নবাবপুর সড়ক দিয়ে রায় সাহেব বাজার মোড়, বাহাদুর শাহ পার্ক, জঘন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, পাটুয়াটলি হয়ে ওয়াইজঘাটে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে বিসর্জন হবে। শোভাযাত্রা ও বিসর্জন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শোভাযাত্রার সামনে, পেছনে ও মাঝে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন: দুর্গোৎসব জাতীয় বড় উৎসবের মধ্যে একটি। এই উৎসবকে ঘিরে সমন্বিত ও সুদৃঢ় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৩৪টি সার্বজনীন দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরমধ্যে ৯টি সবচেয়ে বড় মন্দির। এগুলো হচ্ছে ঢাকেশ্বরী মন্দির, রামকৃঞ্চ মন্দির, কলাবাগন মন্দির, বনানী মন্দির। এর বাইরে সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দির, রমনা কালি মন্দির, উত্তরা সার্বজনীন পুজো মণ্ডপ, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট সমাজকল্যাণ সংঘ ও বসুন্ধরা সার্বজনীন পুজো মণ্ডপসহ সকল মন্দিরেই কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে।
তিনি বলেন: আমরা পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে কয়েক দফায় বৈঠক করেছি। পূজায় সব ধরণের পটকা, আতশবাজি, মাদকের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। নিরাপত্তা সুবিধায় বিজয় শোভাযাত্রায় উচ্চ স্বরে বাজনা বন্ধ থাকবে। বিসর্জনের সময় নদীতে নৌ-পুলিশ, ডুবুরিরা মোতায়েন থাকবে। সার্চলাইটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
এবার বিসর্জনের দিন পড়েছে শুক্রবার। তাই আজানের সময়, নামাজের সময় দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সকল ধরণের বাদ্য-বাজনা স্থগিত থাকবে।
পুরো ঢাকা শহরে নিরাপত্তা চেকপোস্ট থাকবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন: সম্মানিত ভক্ত ও দর্শণার্থীদের অনুরোধ জানাচ্ছি পুজো মণ্ডপে ছুরি, কাচি, পোটলা, ব্যাকপ্যাক, ব্যাগ নিয়ে আসবেন না। কারণ কাউকে এসব নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।