বিপিএলের প্লে-অফ রাউন্ড মাঠে গড়াচ্ছে শুক্রবার। যাতে ফাইনাল নিশ্চিত করার লড়াইয়ে শামিল চার দল। এপর্বে রয়েছে দুটি কোয়ালিফায়ার, একটি এলিমিনেটর ম্যাচ। ১২ ডিসেম্বরের ফাইনালসহ টুর্নামেন্টে ম্যাচ বাকি চারটি। হাই-ভোল্টেজ ম্যাচগুলোতে রানবন্যা দেখতে মুখিয়ে থাকবেন দর্শকরা। দলগুলোও চাচ্ছে খরা কাটিয়ে মিরপুরে ফিরুক রান উৎসব।
বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হওয়ার আগে লিগপর্বের শীষ দুই দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ঢাকা ডায়নামাইটসের কোচ বেশি বেশি রানের আশাই করলেন।
কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বললেন, ‘অবশ্যই এরচেয়ে ভাল উইকেট আশা করি। এধরনের উইকেটে রান করা অনেক কঠিন। অনেকে বলছে ছেলেদের স্কিল নেই। এখানে তো বাইরের অনেক ভাল খেলোয়াড়ও আসছে। তাদের স্কিলও আমাদের ছেলেদের সাথে হেরফের হচ্ছে না, কারণ তারাও রান করতে পারছে না। উইকেটটা আশা করি ভাল হবে। একদিন বিশ্রাম পেয়েছে উইকেট, ভাল হলে টুর্নামেন্টের জন্যই ভাল। ব্যাটসম্যান যদি আগে বোঝে বল উঁচু-নিচু হবে, তাতে ড্রেসিংরুম অস্থির হয়ে যায়।’
অসমান বাউন্স, গতির তারতম্যে ব্যাটসম্যানদের জন্য দিনকে দিন কঠিন হচ্ছে মিরপুরের উইকেট। ঢাকায় বিপিএলের প্রথমপর্বে ১৬ ম্যাচে একশ’র নিচে স্কোর হয়নি। চট্টগ্রাম হয়ে বিপিএল আবার যখন ঢাকায়, পরে প্রথম চার ম্যাচের দুটিতে হয়েছে একশ’র নিচে স্কোর। যদিও ওই দুই ম্যাচের মাঝে একটি ম্যাচে ঢাকা করেছে দুইশ’র বেশি রানও। উইকেটের সহায়তায় নয় বরং প্রতিপক্ষ রাজশাহী কিংসের ফিল্ডারদের ক্যাচ মিসের মহড়ায় সেটি সম্ভব হয়েছে!
ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন আবার উইকেটকে না দুষলেও পেতে চান ব্যাটিং উইকেটই, ‘ আমি বলব না উইকেট খুব খারাপ। যেদিন উইকেট খারাপ হল, সেদিনও ঢাকা দুইশ’র উপর রান করেছে। আমরা চাই ভাল উইকেটে খেলা হোক, ফ্ল্যাট উইকেটে খেলা হোক, যেখানে দুদলই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলবে।’
উইকেট নিয়ে অসন্তোষের পর বিপিএলে আম্পায়ারিং নিয়েও হচ্ছে নানা কথা। মাঠে আম্পায়ারদের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিতে দেখা গেছে। আম্পায়ারিং যে ভাল হচ্ছে না সেটি জানালেন দু’দলের কোচই। তবে সালাউদ্দিন আম্পায়ারিংয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সুজন ব্যাপারটা মেনে নেয়ারই পক্ষে।
সালাউদ্দিন যেখানে বললেন, ‘আশা করব এধরনের টুর্নামেন্টে ভাল আম্পায়াররা আম্পায়ারিং করবে। আমার কাছে মনে হয়, অনেক আম্পায়ার ছিল, যারা এই পর্যায়ে আগে আম্পায়ারিং করেনি। আশা করব আমাদের দেশে যারা ভাল আছে, তাদেরকে দিক বা বাইরে থেকে ভাল আম্পায়ার নিয়ে আসুক।’
সুজন সেখানে বললেন, ‘ভুল সিদ্ধান্ত হয়। যেমন আমাদের একটা ম্যাচে শহীদ আফ্রিদি ৩৭ রানে আউট হল। এরকম কিছু সিদ্ধান্ত ছিল।’
সেসব মেনে অবশ্য আম্পায়ারদের কোর্টেই বল রাখলেন সুজন, ‘এটা খেলারই অংশ। আম্পায়ার্স রিপোর্ট একটা আমাদের কাছেও আছে, আমরা বলতে পারি এটা হয়েছে, ওটা হয়েছে। কিন্তু দিনশেষে এটা আম্পায়ার্স কল। কোন আম্পায়ার যদি বলে আমাদের বাজে দিন গেছে। এটা হতে পারে। কারণ তারা খালি চোখে দেখে। আমাদের সময় রংপুরের দুই-চারটা ওয়াইডও মাথার উপর দিয়ে গেছে, কিন্তু আম্পায়ার দিতে পারেনি। খালি চোখে দেখে হয়তবা তারা মনে করেনি।’
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টায় ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে (প্রথম কোয়ালিফায়ার) মুখোমুখি হবে সাকিবের ঢাকা ও তামিমের কুমিল্লা। তার আগে দুপুর ২টায় এলিমিনেটর ম্যাচে মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহর খুলনা টাইটানস ও মাশরাফীর রংপুর রাইডার্স।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে হেরে গেলেও কুমিল্লা ও ঢাকার সামনে থাকবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলে ফাইনালের টিকিট কাটার সুযোগ। তখন প্রতিপক্ষ হবে এলিমিনেটরের জয়ী দল। রোববার হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার। আক্ষরিক অর্থে যেটি অঘোষিত সেমিফাইনাল।