ইরাকের কথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর নির্যাতনের শিকার দুইজন ইয়াজিদি নারী শাখারভ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। যৌন দাসত্ব থেকে পালিয়ে আসা নাদিয়া মুরাদ বাসি এবং লামিয়া আজি বাসার ইউরোপের মানবাধিকার বিষয়ক এই শীর্ষ পদকটি লাভ করেন।
আনদ্রেই শাখারভ নামের ভিন্নমতাবলম্বী সোভিয়েত বিজ্ঞানীর নামানুসারে মুক্তচিন্তার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতি বছরই পুরষ্কারটি দেয়া হয়।
২০১৪ সালে হাজারো ইয়াজিদি কিশোরী ও নারীদের সাথে তাদের দুজনকেও অপহরণ করে নিয়ে যায় আইএস। জোরপূর্বক যৌন দাস হিসেবে ব্যবহার করে।
সেখান থেকে বেঁচে আসার পর এই দুইজন ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
২০১৪ সালের আগস্টে ইরাকের উত্তরাঞ্চলের শহর সিনজার দখল করে নেয় আইএস জঙ্গিরা। তারা ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। ইরাক এবং সিরিয়ায় ইয়াজিদি সম্প্রদায়কে পরিকল্পিতভাবে নিশ্চিহ্ন করতে আইএস গণহত্যা চালায় বলে অভিমত জাতিসংঘের।
এসময় হাজারো নারীকে ‘যুদ্ধের উচ্ছিষ্ট’ হিসেবে বিবেচিত করতো তারা। দাস বাজারে উন্মুক্তভাবে আইএস জঙ্গিদের কাছে বিক্রিত হয় নারীরা। অনেককেই হত্যা করা হয় গুলি করে।
নাদিয়া মুরাদ বাসিকে তার গ্রামের বাড়ি কোচো থেকে অপহরণ করে মসুলে নিয়ে যায় আইএস জঙ্গিরা। সেখানে নির্যাতন এবং ধর্ষণের শিকার হয় সে। পরে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও সিনজার হামলায় হারায় ৬ ভাই আর মাকে।
লামিয়া আজি বাসারের বাড়িও ছিলো কোচোতে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে অপহৃত হওয়ার পর ২০ মাসের বন্দি জীবন কাটায়। বহুবার পালানোর চেষ্টা করে অবশেষে মুক্তি পায়।
ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের উদারনৈতিক এএলডিই গ্রুপকে নেতৃত্ব দেওয়া গাই ভারহোফসটাড বিজয়ীদের অনুপ্রেরণাদায়ী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ঘৃণ্য বর্বরতার বিরুদ্ধে তারা অবিশ্বাস্য সাহস এবং মানবিকতা দেখিয়েছে। তারা ২০১৬ শাখারভ পুরস্কার লাভ করায় আমি গর্বিত।
গত বছর এই পুরস্কার লাভ করেন সৌদি ব্লগার রাইফ বাদাউই, যিনি ইসলাম অবমাননার দায়ে এখন ১০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তার শাস্তির ভেতর ১ হাজার বেত্রাঘাতও রয়েছে।