একদিকে চীন, নেপাল, চোখ রাঙানি অপরদিকে পাকিস্তান এবং জম্মু-কাশ্মীরের হুমকি মোকাবেলা, সাথে আছে বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা! এসবের মাঝেই ভারতে হানা দিচ্ছে ফসল বিনষ্টকারী পতঙ্গ পঙ্গপাল। কোনটা সামলাবে ভারত?
শনিবার সকালে গুরুগ্রামের আকাশ কালো করে ধেয়ে আসলো পঙ্গপাল। এমনিতেই লকড়াউনের কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে সাধারণ মানুষ। আর পঙ্গপাল যেন সেই ক্ষতি দ্বিগুণ করতে এলো দস্যুর মতো। গুরুগ্রামের সাইবার হাব এলাকার কাছে এমনভাবে হাজার হাজার পঙ্গপাল দল বেঁধে আক্রমণ করেছে যাকে দেখে প্রথমে আকাশের কালো মেঘ মনে হতে পারে।
তবে গুরুগ্রামে পঙ্গপাল প্রবেশ করলেও এখনো রাজধানী দিল্লির দিকে আসেনি। আশঙ্কা করা হচ্ছে যেকোনো দিন দিল্লিতেও হানা দিতে পারে এই বিধ্বংসী পতঙ্গ।
পঙ্গপালের হামলা থেকে বাঁচতে গুরুগ্রামের বাসিন্দাদের যতোটা সম্ভব দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি বাসনপত্র, ঢাক-ঢোল, হাতের কাছে যা পাওয়া যাবে তাই পিটিয়ে ক্রমাগত শব্দ করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খুব জোরে নানারকম শব্দ করলে পঙ্গপালের ঝাঁক ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়বে বলে অনুমান করা হয়ে থাকে।
গুরুগ্রামের এমজি রোডের বেভারলি পার্ক ২-এর বাসিন্দা রিতা শর্মা বলেছেন, পঙ্গপালের দলের ঝাঁকে ঝাঁকে এগিয়ে আসা সকাল ১১ টা নাগাদ শুরু হয়। আমরা সঙ্গে সঙ্গে দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে এই ভংকর পতঙ্গ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন বলেছে, কৃষকদের অবশ্যই কীটনাশক স্প্রে করার পাম্পগুলোকে প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে প্রয়োজনের সময় তারা তা ব্যবহার করতে পারেন।
পঙ্গপালের সাথে লড়াই করতে ১১টি কন্ট্রোল রুম খুলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরই মধ্যে হরিয়ানার মুখ্যসচিব কেশনি আনন্দ অরোরা রাজ্যের কৃষিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন পঙ্গপালের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে সব রকম পদক্ষেপের প্রস্তুতি রাখে।
এর আগে রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানাসহ পশ্চিম এবং মধ্য ভারতের বহু অংশে হানা দিয়ে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল নষ্ট করেছে পঙ্গপাল।
মূলত আফ্রিকা থেকে এই পঙ্গপালের ঝাঁক ইরান, পাকিস্তান হয়ে ভারতে এসে ঢুকেছে। এরা ক্ষেতের পর ক্ষেত নষ্ট করে দিতে পারে চোখের পলকেই।