চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

দার্জিলিংয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: মমতা ব্যানার্জি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি জনপদ দার্জিলিংয়ে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিলে এক পুলিশ অফিসার ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই বিক্ষোভকে “গভীর ষড়যন্ত্র” বলে অভিহিত করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় পুলিশ সবোর্চ্চ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন অংশে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

একজন আইন প্রণেতার ছেলেকে গ্রেপ্তার এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার (জিজেএম) জ্যেষ্ঠ নেতার বাড়িতে গতরাতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে, এমন অভিযোগে দার্জিলিংয়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। এসময় ছুরিকাঘাতে আহত হন রিজার্ভ ব্যাটালিয়নের সহকারী কমান্ড্যান্ট কিরান তামাং। বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর মধ্যে এসময় ব্যাপক সংঘর্ষে উভয়পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হন। এছাড়াও পুলিশের একটি গাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।

জিজেএম সমর্থকরা নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্দেশ্যে পাথর, বোতল এবং এমনকি পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারলে তারাও লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।

পাহাড়ি এলাকায় পর্যটকরাও দুরবস্থায়

পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি একে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করে বলেন, “বিদ্রোহী দলগুলো জেজিএম’কে সমর্থন করছে। এখানে যাই হচ্ছে তা একটি গভীর ষড়যন্ত্র।” সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এমনটি বলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে পুলিশ অফিসার কিরান তামাং নিহত হওয়ার খবর দিলেও পরে নিশ্চিত করেন, কিরান গুরুতর আহত হয়েছেন।

ষষ্ঠ দিনের মতো দার্জিলিংয়ে জেজিএম’র ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চলছে, যা পাহাড়ি এলাকাটিকে অচল করে দিয়েছে। গত সোমবার দার্জিলিং এবং কালিমপোং জেলা এবং ডুয়ার্স (হিমালয়ের পাদদেশে জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা পর্যন্ত বিস্তৃত) এই বিস্তৃত এলাকা জুড়ে বন্ধের ডাক দেয় দলটি। মমতা বানার্জি রাষ্ট্রপরিচালিত স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষাকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা দেওয়ার বিরুদ্ধে এই ধমর্ঘটের ডাক। কিন্তু পরে এই বিক্ষোভ রূপ নেয় কয়েক দশক ধরে চলে আসা গোর্খাল্যান্ডকে আলাদা রাজ্য হিসেবে ঘোষণার দাবিতে।

নতুন আইন পাহাড়ি জেলাগুলোতে আরোপ করা হবে না এমন নিশ্চয়তার পরও এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।

জিজেএম-এর মিডিয়া সেলের প্রধান এবং দার্জিলিং-য়ে জিজেএম-র আইনপ্রণেতা অমর রাজের ছেলে ভিক্রাম রাজকে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অমর রাজ বলেন, তার ছেলের সাথে রাজনীতির সম্পৃক্ততা নেই।

জেজিএম-র সহসাধারণ সম্পাদক বিনায় তামাং অভিযোগ করে বলেন, তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ এবং তৃণমুল কংগ্রেসের ক্যাডাররা ভাঙচুর চালিয়েছে। রাত তিনটায় এই অভিযান চালায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। দুই দিন আগে দার্জিলিং জেলায় দলীয় প্রধান বিমাল গুরুং-এর বাসায় যেভাবে অভিযান চালানো হয়েছিলো একই ভাবে তার বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ তার।

“আমরা হতবাক যে একজন স্থানীয় সাংবাদিক ভিক্রাম রাজকে গতরাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন মিডিয়া হাউজের সাথে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। দার্জিলিংয়ে যদি একজন সাংবাদিক নিরাপদ না থাকে তবে কে থাকবে?” প্রশ্ন ছুড়ে তামাং বলেন, দার্জিলিং অঞ্চলে যেনো একটি ‘ভার্চুয়াল’ জরুরি অবস্থা রয়েছে।

বিজোনবারিতে একটি জনসেবা বিভাগের অফিসে জিজেএম-এর সমর্থকরা স্থানীয় সময় রাত একটায় আগুন জ্বালিয়ে দেয়। গুরুং দাবি করেন, লেবং কার্ট রোডে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী দিয়োরাজ গুরুংয়ের বাড়িতে জেজিএম সমর্থকরা পাথর নিক্ষেপ ও পেট্রোল বোমা ছুড়েছে। তারা তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।