চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

দাম্পত্য কলহ সমাধানের আশ্বাস দিয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন

গ্রেপ্তার কবিরাজ লালচাঁন

দাম্পত্য কলহ সমাধানের আশ্বাসে গৃহবধূকে নির্যাতন করার অভিযোগে কবিরাজ লালচাঁন বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান র‌্যাব-১।

মঙ্গলবার রাত সোয়া একটার দিকে গাজীপুরের কালিগঞ্জের বক্তার ইউনিয়ন পরিষদের ব্রাহ্মণগাঁও এলাকা থেকে গৃহবধূ নির্যাতনকারী কবিরাজ লালচাঁন বাবু (৫২) নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১ এর পূর্বাঞ্চল ক্যাম্পের সিপিসি-৩ এর আভিযানিক দল।

বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের কেয়ারিয়া গ্রামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করা হয়। ওই ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় পরদিন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং-৪৪) দায়ের হয়।

বিষয়টি নিয়ে র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে জানতে পারে এলাকার কবিরাজ লালচাঁন বাবু সুকৌশলে গৃহবধূকে নির্যাতন করে এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। পরে মামলা হলে কবিরাজ লালচাঁন আত্মগোপন করে। র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দলের গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে কবিরাজ লালচাঁনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কবিরাজ লালচাঁনকে গ্রেপ্তারের অভিযানে নেতৃত্বে থাকা র‌্যাব-১ এর মেজর আব্দুল্লাহ আল মেহেদী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, কবিরাজ লালচাঁন এর আগেও বিভিন্ন সময়ে তার কবিরাজি ব্যবসার আড়ালে অনেক নারীদের সঙ্গে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে নির্যাতন করে আসছিল। অনেক ভুক্তভোগী সামাজিক পরিস্থিতি ও মান সম্মানের কথা চিন্তা করে কবিরাজের এসব বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতেন।

জিজ্ঞাসাবাদে কবিরাজ লালচাঁন গৃহবধূকে নির্যাতন করার দায় স্বীকার করেছে জানিয়ে তিনি বলেন: দীর্ঘদিন যাবৎ নিজ বাড়ীতে কবিরাজী ব্যবসার আড়ালে এসব অনৈতিক কাজ করছিল কবিরাজ লালচাঁন। ঘটনার দিন ভুক্তভোগী তার পারিবারিক সমস্যাজনিত দাম্পত্য কলহ সমাধানের ব্যাপারে তার এক ভাই ও ভাবীসহ কবিরাজের বাড়িতে যায়। এক পর্যায়ে কবিরাজ ভিকটিমের দাম্পত্য কলহের সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেয় এবং কবিরাজি কাজের জন্য নির্জন ঘরে শুধুমাত্র ভিকটিমকে থাকার কথা জানায় এবং ভুক্তভোগীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশ্রিত পানি পান করিয়ে অচেতন করে তাকে নির্যাতন করে।

মেজর মেহেদী বলেন, ঘটনার পর কবিরাজ বাড়িতে শোরগোল হলে উপস্থিত বাড়ির লোকজন ঘটনার বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার লক্ষ্যে ভুক্তভোগী ও তার ভাবীকে বিভিন্ন প্রকারের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মামলা হওয়ার পর এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহায়তায় অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্নভাবে ভিকটিম ও তার নিকটাত্মীয়দের চাপ প্রয়োগ করে।

এছাড়াও কবিরাজি ব্যবসার কথা চিন্তা করে নির্যাতনের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। পরে কোনভাবেই কাজ না হওয়ায় কবিরাজ এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করে।