প্রকৃত ভালোবাসা নাকি চলচ্চিত্র কিংবা উপন্যাসের ভালোবাসার মত নিষ্কণ্টক হয়না। কিন্তু তাতে কি? ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে রোমান্টিক চলচ্চিত্র দেখতে তো সবাই ভালোবাসে। চলচ্চিত্রের কাহিনীর সাথে নিজেদের জীবনটাকে মিশিয়ে ফেলতেও ভালোবাসে।
মজার বিষয় হলো, রোমান্টিক ছবি দেখে ভালো সময় কাটানোর পাশাপাশি সম্পর্কটাও মজবুত হয়। রোমান্টিক ছবি দেখে সময় কাটানো দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য উপকারি একথা জানানো হয়েছে এক গবেষণায়।
গবেষণা যা বলছে
নিউইয়র্কের ইউনিভার্সিটি অব রচেস্টারে করা একটি গবেষণায় জানা গেছে, যেসব চলচ্চিত্রে সম্পর্কের জটিলতা এবং পরিশেষে সমাধান করা হয় সেগুলো দাম্পত্য সম্পর্ক মজবুত করার জন্য খুবই ফলপ্রসূ। এসব চলচ্চিত্রের বিচ্ছেদের হার কমানোর ক্ষমতা ম্যারেজ কাউন্সিলিং পদ্ধতির সমান। ১৭৪টি জুটির ওপর চালানো হয় এই গবেষণা। তিনটি দলে ভাগ করে ম্যারেজ কাউন্সিলিং এর বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় তাদের ওপর। তাদের মধ্যে ‘মুভি গ্রুপ’কে কিছু চলচ্চিত্রের তালিকা দিয়ে নিজের বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। শর্ত থাকে সপ্তাহে অন্তত একটি করে চলচ্চিত্র দেখতে হবে। এরপর একটি প্রশ্নমালা তৈরি করা হয় যেখানে চলচ্চিত্রে দেখানো দাম্পত্য জীবনের নানান বিষয়ের ব্যাপারে প্রশ্ন থাকে।
গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয় জার্নাল অব কনসালটিং অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে। ফলাফলে দেখা যায় যে, তিন বছরের সময়কালে ‘মুভি গ্রুপ’ এর দম্পতিদের বিচ্ছেদের হার ২৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই সফলতার হার ছিল অন্য দুই গ্রুপের বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে ম্যারেজ কাউন্সিলিং করা দম্পতিদের সমান।
দাম্পত্যজীবনে ইতিবাচক প্রভাব
সম্পর্ক যখন ‘তুমি’ এবং ‘আমি’তে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়, রোমান্টিক চলচ্চিত্র তখন দুজনকে ‘আমরা’তে রূপ দেয়। দুজন মিলে সপ্তাহে অথবা মাসে অন্তত একটি রোমান্টিক চলচ্চিত্র দেখলে নিজেদের মধ্যে কিছু ভালো সময় কাটানো যায়। এতে একে অপরের প্রতি মনোযোগ এবং আকর্ষণ বাড়ে। এছাড়াও রোমান্টিক চলচ্চিত্র মনকে প্রশান্ত করে। চলচ্চিত্রে সম্পর্কের চড়াই-উৎরাই এবং তারপর সুন্দর সমাধান দেখে, নিজেদের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও আশা জাগে দম্পতিদের মনে। ফলে নিজেদের ভুলটা খুঁজে নিয়ে সমস্যাগুলোর সমাধান খোঁজার চেষ্টা করে তারা। আর এভাবেই দাম্পত্য সম্পর্ককে সুখের করতে সহায়তা করে রোমান্টিক চলচ্চিত্র ।
চলচ্চিত্র নির্বাচন
দুজন মানুষ কীভাবে প্রেমে পরে, সেই কাহিনীর চলচ্চিত্র নির্বাচন করা হয়নি গবেষণায়। কারণ সেই ধাপ তো আগেই পার করে এসেছে দম্পতিরা। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে পরিশেষে সফলতা অর্জিত হয়েছে, তেমন কাহিনীর চলচ্চিত্র নির্বাচন করা হয়েছিল গবেষণায়।
উল্লেখযোগ্য কিছু চলচ্চিত্র
গবেষণার তালিকায় কী কী চলচ্চিত্রের নাম ছিল নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে? গবেষণায় ‘মুভি গ্রুপ’কে যেসব নাম দেয়া হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দশটি চলচ্চিত্রের নাম দেওয়া হলো।
- মি অ্যান্ড মিসেস স্মিথ
- সুইট হোম অ্যালাবামা
- অ্যাজ গুড অ্যাজ ইট গেটস
- ফুলস রাশ ইন
- গেজ হু
- ইটজ কমপ্লিকেটেড
- লাইফ অ্যাজ উই নো ইট
- মারলি অ্যান্ড মি
- হোয়েন ম্যান লাভজ এ ওম্যান
- দ্যা স্টোরি অব আস
তাহলে দেরি কেন? আপনার সঙ্গীকে নিয়ে আজই দেখে ফেলুন একটি রোমান্টিক চলচ্চিত্র। দুজনে সুন্দর কিছু সময় কাটানোর পাশাপাশি সম্পর্কের ভীতটাকেও মজবুত করে ফেলুন।