ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নিলে আগামী মঙ্গলবার উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছেন তারা৷ একই সাথে প্রশাসনের করা মামলা অযৌক্তিক উল্লেখ করে তা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়৷
রোববার দুপুরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন৷
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিল: অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার, প্রশাসনের করা নিপীডন বিরোধী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহার, দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রক্টরের পদত্যাগ ৷
এসময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, প্রশাসন আমাদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য আমরা নিজেদেরকে ভাংচুরকারী দাবি করে রাজু ভাস্কর্যে প্রায় তিনদিন অবস্থান নিয়েছি৷ কিন্তু প্রশাসন আমাদেরকে গ্রেফতার করতে আসেনি৷
বিক্ষোভ মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র দিয়ে কলাভবনের ভিতরে ঢুকে এবং ব্যবসা অনুষদের ভেতরে প্রবেশ করে আবার ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে আসে৷ তারপর ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র থেকে মিছিলটি কাজী মোতাহার হোসেন ভবন, মোকাররম হোসেন ভবনের ভিতরে প্রবেশ করে৷ এরপরে কার্জন হল এলাকা ঘুরে সেখানে শেষ হয়৷
এসময় নিপীড়কদের বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্য ও অপরাজেয় বাংলার মুখে কালো কাপড় বেধে দেয়া হয়।
সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবীতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ১১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছিল৷ কিন্তু গত ১৫ জানুয়ারি দুপুরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন৷ তখন প্রশাসন ছাত্রলীগের সহযোগিতায় তাদের আন্দোলনকে ভুল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠে এবং ছাত্রলীগ আন্দোলনকারী ছাত্রীদের উত্ত্যাক্ত করারও অভিযোগ ওঠে৷
১৭ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ হামলার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে৷ মিছিল শেষে তারা প্রক্টর অধ্যাপক ড. একে এম গোলাম রব্বানির কাছে তিন দফা দাবি নিয়ে যান৷ প্রক্টর অফিসের সামনে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অফিসের প্রধান ফটক বন্ধ পান৷ তখন তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে প্রক্টর অফিসের কলাপসিবল গেইট ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং প্রক্টরকে প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন৷
পরে প্রক্টর বিকাল সাড়ে পাঁচটায় শিক্ষার্থীদেরকে উপাচার্যের কাছে নিয়ে যান৷ তারপর উপাচার্য তাদের দাবিগুলো শুনেন এবং তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন৷ তারপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ৪৮ কর্মঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে তাদের অবরোধ স্থগিত করেন৷
কিন্তু ১৮ জানুয়ারি রাতে জানা যায় যে প্রক্টর ওই দিনে ভাংচুরকারীদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে৷ এরপর শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ভাংচুরকারী বলে বৃহস্পতিবার রাত ২টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেয়৷